ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির অভিযোগ নাকচ করলেন লোটাস কামাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১১

ঢাকা: শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল।

বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।



শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে আমার কোম্পানি সিএমসি কামালের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। ’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আছে কি না সেটা আপনারাই দেখবেন। ’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আমার কোম্পানির শেয়ারের গত দুই বছরের দাম অতি মূল্যায়িত ছিলো বলে উল্লেখ আছে। তার কারণও ওখানে লেখা আছে। এর বাইরে কোনো কথা নেই। আমাকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। ’

কমিটির সভাপতি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ আমি বক্তব্য দেওয়ায় নাকি শেয়ারবাজারে সূচক নেমে গিয়েছিলো এমন অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি কথা বলার আগে সূচক ৯ হাজার ৮শ’ থেকে নেমে সাড়ে ৬ হাজার হয়েছিলো। আমার কথার কারণে সূচক কমেনি। ’

তিনি বলেন, ৯ জুন বাজেট উত্থাপনের পর পুঁজি বাজার নিয়ে কমিটি বৈঠক করবে। যেহেতু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে সেই কারণে ওই বৈঠকে আমি সভাপতিত্ব করবো না। ’

সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আজকের বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, পুঁজি বাজারে বিনিয়োগে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক না করা, বিও অ্যাকাউন্টের ওপর কর আরোপ না করা এবং পুঁিজবাজারে ব্যক্তিগতভাবে বিনিয়োগকারীদের আয়ের ওপর আয়কর ধার্য না করার সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ আসন্ন বাজেটে এই বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি। বর্তমানে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলো শতকরা ২০ ভাগ কর দিয়ে থাকে। কমিটি এই কর ১০ ভাগে নিয়ে আসার সুপারিশ করেছে। ’

বৈঠকে শিল্পে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর অবকাশ দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন শর্তারোপের সুপারিশ করেছে কমিটি। অনুন্নত এলাকায় শিল্প স্থাপনে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠান যারা সর্বনি¤œ ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে অথবা ১০০ জনের কর্মসংস্থান করবে তাদের কর অবকাশ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূল্যের শতকরা ৩০ ভাগ পুঁজিবাজারে আনার শর্তারোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লোটাস কামাল জানান, কর প্রদানে উৎসাহ এবং প্রদানকারীর সংখ্যা ও কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষে আসন্ন বাজেটে বিদ্যমান ব্যক্তিশ্রেণীর করের হার ২৫ ভাগ থেকে অন্তত ২৪ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি জানান, বিগত দুই বছরের মুল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে ব্যক্তি ও কর্পোরেট উভয় ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ডের উপর বর্তমানে বিদ্যমান কর ২০ ভাগ থেকে ১০ ভাগে এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়া বৈঠকে সরকার অনুমোদিত ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃব ঝড়পরধষ জবংঢ়ড়হংরনরষরঃু (ঈঝজ) কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিদ্যমান ১০ ভাগ কর বেয়াতের ব্যবস্থাকে ৫০ ভাগ এ উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, বৈঠকে কর ফাঁকির প্রবণতা রোধ ও কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যাংক, ইন্সুরেন্স এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর বর্তমান বিদ্যমান করের হার ৪২ ভাগ থেকে অন্তত ৪০ ভাগে এবং অন্য কোম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে ২৭ ভাগ থেকে অন্তত সাড়ে ২২ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া বাজারে শেয়ারের দাম প্রভাবিত হওয়ার আশংকা থাকে বিদায় বিদ্যমান আইনে পরিশোধিত মূলধন ২০ ভাগের কম নিয়ে কর্পোরেট হাউজকে পুঁজিবাজারে নিবন্ধনের যে সুযোগ রয়েছে এটা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

আহম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্ব বৈঠকে কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মা’ল আব্দুল মুহিত, মোঃ আলী আশরাফ, এ. কে. এম. মাঈদুল ইসলাম, মোঃ তাজুল ইসলাম এবং গোলাম দস্তগীর গাজী অংশ নেন ।

এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারি, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সচিব ড. নাসির উদ্দীন আহমেদ, সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনসহ সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।