ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাকায় নাইজেরীয় নাগরিকের হেরোইন বাণিজ্য

সাঈদুর রহমান রিমন <br>সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১০
ঢাকায় নাইজেরীয় নাগরিকের হেরোইন বাণিজ্য

ঢাকা: পোশাক ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরেই হেরোইন ও আফিম ব্যবসা করতেন শুক্রবার ছয় কেজি হেরোইনসহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার নাইজেরিয়ান আফোলোয়ান ওলাদিপুপো জাসিউস। তার আন্তঃদেশীয় মাদক সিন্ডিকেটে যুক্ত রয়েছেন বাংলাদেশের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি।



শনিবার সকালে তোপখানা রোডে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসব জানিয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী ও সহকারী পরিচালক (উত্তর) মো. রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, গুলশানের বিভিন্ন ডিজে পার্টিতে জাসিউস ছিলেন মধ্যমণি। এসব পার্টির সূত্রেই রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের অন্তত ছয় জন তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। হেরোইন-আফিমসহ অন্যান্য মাদক পাচারে তিনি ওই তরুণীদের ব্যবহার করতেন।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘জাসিউস আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একজন মাদক ব্যবসায়ী। নাইজেরিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি খুব ঘন ঘন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ব্যাংককে সফর করতেন। পেশা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন শিশু পোশাক (আমদানি ও রপ্তানিকারক) ব্যবসায়ী বলে। গ্রেপ্তারের সময়ও তার সঙ্গে থাকা তিন লাগেজ ভর্তি বিভিন্ন নমুনা পোশাক পাওয়া গেছে। আর এসবের আড়ালেই ছিল হেরোইন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও এই নাইজেরিয়ান বেশ কয়েকবার হেরোইন, আফিম ও ইয়াবা ট্যাবলেটের বড় চালান নিয়ে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে পৌঁছে দিয়েছেন। এসব মাদকদ্রব্য তিনি সাধারণত মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত ব্যবহার করে সংগ্রহ করতেন। ’

এদিকে, জাসিউসের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুল মান্নাফ কবীর বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় এ মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক সুবোধ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘জাসিউসের কাছ থেকে দুটি মোবাইল সেট ও ১৪টি সীমকার্ড পাওয়া গেছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের তিনটি মোবাইল অপারেটরের সিমকার্ড রয়েছে। বাকি সিম নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ভারতের। মোবাইল সেটে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজনের নাম ও নম্বর সংরক্ষিত ছিল। তবে জাসিউস গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল থেকে সেসব নাম্বারে ফোন করলে তারা সবাই মোবাইল বন্ধ করে দেন। ’

তিনি আরও জানান, ওই নাইজেরিয়ানের কাছে বাংলাদেশি সাড়ে ১০ হাজার টাকা ও অন্য ৬ দেশের মুদ্রা মিলিয়ে ৯০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রশ্নের জবাবে জাসিউস বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে যাওয়া তার অপর সহযোগীকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।

সুবোধ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া যুবক নাইজেরিয়ার নাগরিক এবং সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। ওই যুবকের ব্যাপারে সে আর কিছুই জানে না বলে দাবি করেছেন। ’

তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad