ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা

বিলুপ্তি পথে শত বছরের ‘দি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেড’

গোফরান পলাশ, কলাপাড়া প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১১
বিলুপ্তি পথে শত বছরের ‘দি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেড’

কলাপাড়া (পটুয়াখালী): সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারণে বিলুপ্ত হতে চলেছে পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা কলাপাড়ায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সমবায় প্রতিষ্ঠান ‘দি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেড’-এর স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল ও ম্যাচ ফ্যাক্টরিসহ ১০টি শিল্প ইউনিট।

রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদনশীল খাতে পরিণত করার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।



স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ সমবায় প্রতিষ্ঠান ‘দি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেড’ ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন পরিচালনা পরিষদ ও সমিতির প্রায় ৫ হাজার সদস্য মিলে গড়ে তোলে স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, অয়েল মিল, লেদ মেশিন, সিনেমা হল, ছাপাখানা, বিপণিবিতানসহ ১০টি শিল্প ইউনিট ।

প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে দি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেডের রাইস মিল ও ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে স্থানীয় প্রায় ২ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। ২০ কোটি টাকা মূল্যমানের এ মিল দু’টি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

প্রতিষ্ঠালগ্নে উপকূলের প্রায় ৫ হাজার মানুষ সদস্য হয়ে জনপ্রতি মাত্র ১০ টাকার শেয়ার কিনে এ সমবায় সমিতি গড়ে তোলে ।

এ সময় পরিচালনা পরিষদ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমিতির অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় ওই শিল্প ইউনিটগুলো।

পরবর্তীকালে পরিচালনা পরিষদ ও সমবায় বিভাগের কিছু কর্মকর্তার সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে ওই শিল্প ইউনিটগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া দিন দিন চুরি হয়ে যাচ্ছে সমবায় রাইস মিল ও ম্যাচ ফ্যাক্টরির মুল্যবান যন্ত্রাংশ।

সমবায়ী আইনি প্রক্রিয়ার নামে ওইসব অব্যবহৃত মালামাল বিক্রি নিয়ে চলছে শুধুই চিঠি চালাচালি।

সত্তর দশকের দিকে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে শিল্প ইউনিটগুলেরা ব্যাপক ক্ষতি হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে কিছুদিন চলার পর আর্থিক সঙ্কটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। পরে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন কলাপাড়া উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মিহির কান্তি মজুমদারের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু হলেও মূলধনের অভাবে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারেনি।

খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বাবুল মূল্যবান যন্ত্রাংশসহ স্থাপনার মালামাল চুরি হওয়ার ঘটনা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একাধিকবার এ প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত মালামাল নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিলেও সমবায় কর্মকর্তাদের টালবাহানার কারণে তা থেমে যায়।

এ ব্যাপারে জেলা সমবায় কর্মকর্তা আক্তার হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি খেপুপাড়া সাপ্লাই অ্যান্ড সেল সোসাইটি লিমিটেডের বেশির ভাগ শিল্প ইউনিট প্রায় বিলুপ্ত বলে স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, বাকি যে সব ইউনিট চালু রয়েছে সেগুলোর উৎপাদনক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে সমবায় অধিদপ্তরে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ