ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢেলে সাজানো হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেণ্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, মে ২, ২০১১
ঢেলে সাজানো হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বন্দরকে চারটি জোনে ভাগ করে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এর নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং পুলিশকে।



সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর নিরাপত্তা উপদেষ্টা কমিটি এবং ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটিজ (আইএসপিএস) কোড বাস্তবায়ন কমিটি আলাদাভাবে বৈঠক করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বন্দরে ভবনে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান কমোডর আনওয়ারুল ইসলাম। অন্যদিকে বন্দরের রেস্ট হাউসে আইএসপিএস সংক্রান্ত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নৌবাণিজ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মো. জোবায়ের।

উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বাংলানিউজকে জানান, বন্দরের চারটি সাইটে চার সংস্থাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষিত জেটি ও জেটি সংলগ্ন নদীর সাইটে বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা, কর্ণফুলী নদীপথে বহির্নোঙ্গরে ও হারবার মাউথে কোস্টগার্ড, মুক্ত সাগরের বন্দর সীমানার কুতুবদিয়াসহ আশপাশের এলাকায় নৌবাহিনী এবং স্থলভাগে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘বর্তমানেও এসব সংস্থাই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু তাদের আরও কঠোর এবং সক্রিয় হতে বলেছি। ’

বৈঠকে উপস্থিত সিএমপি’র বন্দরে জোনের উপ-কমিশনার কুসুম দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বন্দর সীমানায় পুলিশের বিশেষ টহলের ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুত বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করব। ’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত বন্দরের এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দরে আসা বিদেশি জাহাজগুলোতে ওয়াচম্যান নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে জাহাজগুলোর এদেশিয় এজেন্টরাই ওয়াচম্যান নিয়োগের দায়িত্ব পালন করবেন। তারা সেটা করতে না চাইলে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়াচম্যান নিয়োগে বাধ্য করবে। ’

বন্দর চেয়ারম্যান জানান, আইএসপিএস কোড অনুসরণের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই বন্দরে আইএসপিএস কোড নিয়ে তিনদিনের একটি প্যাকেজ ট্রেনিং হবে।

এছাড়া আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে আগামী মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি সেমিনারের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও বন্দর চেয়ারম্যান জানান।

এদিকে আইএসপিএস কোড বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে বন্দরের জেটি এবং বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি জাহাগুলোতে পাইরেসি বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে  কোস্টগার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন  সিএমপি’র বন্দরে জোনের উপ-কমিশনার কুসুম দেওয়ান।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি থেকে কনটেইনারে করে সিঙ্গাপুরে চলে যান আল আমিন ও দ্বীন ইসলাম নামে অস্থায়ী দুই শ্রমিক। সিঙ্গাপুরের পাসির পানজাং টার্মিনালে কনটেইনার খুলে মৃত অবস্থায় আল আমিন এবং কঙ্কালসার অবস্থায় দ্বীন ইসলামকে পাওয়া যায়।

দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়া এ ঘটনার পর গত মঙ্গলবার বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করা কলম্বোগামী একটি জাহাজে লাফিয়ে ওঠার সময় এক যুবককে আটক করে নিরাপত্তা কর্মীরা। তিনি পালিয়ে সিঙ্গাপুর যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

এ দু’টি ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতার অভিযোগ ওঠে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, মে ২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।