ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১১

ঢাকা: ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংস ঘটনার তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের অন্যতম সদস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মনোয়ার হোসেন আখন্দ প্রতিবেদনের কপি (নকল) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে দেন।



তদন্ত প্রতিবেদনে সহিংস ঘটনার বিবরণ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে।

৫ খ-ের মোট ১০৭৮ পাতার এ তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশের বৃহত্তম তদন্ত প্রতিবেদন বলে উল্লেখ করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন জানান, অতি দ্রুতই এ প্রতিবেদনের সুপারিশ জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

তিনি বলে, ‘আমরা এ প্রতিবেদন পড়ে দেখে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। ’

এসব সহিংস ঘটনায় যেসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ মামলা করার সাহস পাননি, তারা সহযোগিতা চাইলে প্রয়োজনে সরকার তাদের সহযোগিতা দেবে বলেও জানান মন্ত্রী।

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সারা দেশে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে তা তদন্তের জন্য হাইকোর্ট ২০০৯ সালে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ শাহাবুদ্দিনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।

কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মনোয়ার হোসেন আখন্দ এবং ঢাকা মেট্্েরাপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলাম।

কমিশনকে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার ব্যাপকতায় কমিশন কাজের সুবিধার্থে সময় বাড়ানোর আবেদন করলে তাদের এক বছর সময় দেওয়া হয়।

৫ খ-ের প্রতিবেদনে ২০০১ এর নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকে মাত্র ১ বছর ৩ মাসের ঘটনাগুলোর ওপর প্রতিবেদন দিয়েছে কমিশন।

প্রতিবেদনে ৩ হাজার ৬২৫টি সহিংস ঘটনার উল্লেখ ও এ ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এর মধ্যে রাজনৈতিক হত্যাকা-ের ঘটনা রয়েছে ৩৫৫টি।

এছাড়া হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

কমিশনের সদস্য মনোয়ার হোসেন আকন্দ জানান, নির্বাচনের পর থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত যেসব সহিংস ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর ভেতর থেকে ৫ হজার ৫৭১টি অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ হাজার ৬২৫টির উপর প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ২০০৬ সাল পর্যন্ত আরও অসংখ্য সহিংস ঘটনা রয়েছে। এ সময় আরও ১৪ হাজারের মতো সহিংস ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদনের প্রথম খণ্ডে তদন্ত রিপোর্ট এবং ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় খণ্ডে ভোলা, তৃতীয় খণ্ডে বরিশাল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর অঞ্চল, চতুর্থ খণ্ডে খুলনা এবং ৫ম খণ্ডে রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকা অঞ্চলের সহিংস ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাভোকেট সাহারা খতুন আরও বলেন, ‘মাত্র এক বছর তিন মাসেই এতো ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা অব্যাহত ছিল। তারা শুধু আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকেই হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘর ভাঙচুর, ধর্ষণ করেনি, হিন্দু ধর্মালম্বীদের ওপরও একই ধরনের অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের বিতাড়িত করার জন্য। এরপর আরও যে কত ঘটনা আছে, যা লোকলজ্জা বা ভয়ে কেউ প্রকাশ করতে চায় না। ’

বাংলাদেশ সময়:  ১৮১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad