ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কনটেইনারে করে সিঙ্গাপুর

‘নিছক দুর্ঘটনা’ বলে রিপোর্ট দিতে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেণ্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১
‘নিছক দুর্ঘটনা’ বলে রিপোর্ট দিতে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দু’জন অস্থায়ী শ্রমিকের কনটেইনারের ভেতর করে সিঙ্গাপুর চলে যাওয়ার বিষয়টিকে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করে আগামী  রোববার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি।

প্রতিবেদনে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ কয়েক দফা সুপারিশ থাকছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।



এদিকে কনটেইনারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা আল আমিনের লাশ পচে গলে যাওয়ায় সেটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।

প্রতিবেদন দাখিল প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রোববার চেয়ারম্যানের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কিত অংশের খসড়া প্রস্তুত হলেও সুপারিশমালা এখনো তৈরি করতে পারিনি। ’

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দু’শ্রমিকের মাদকাসক্ত হয়ে কনটেইনারের ভেতর ঢুকে পড়ার বিষয়ে নিশ্চিত কোন প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি।

এছাড়া এ ঘটনার পেছনে পরিকল্পিতভাবে পাচার হওয়া, সাবোটাজ বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কাজ করেছে এসব বিষয়ে কমিটি তদন্ত করলেও নিশ্চিত কোন প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘পুরো বিষয় বলতে পারব না। শুধু এটুকু বলব এটি ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘটিত কোনো ঘটনা ছিল না। ’

আল আমিনের লাশ দেশে আনার বিষয়ে ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কয়েক দফায় সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

তারা জানিয়েছেন, লাশটি পঁচে, গলে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় সেটি দেশে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। এর ফলে লাশটি সেখানেই দাফন করা হবে কিনা তা নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তায় ভুগছেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।

ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত হয়তো লাশটি দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবেনা। সুস্থ হলে দ্বীন ইসলামকে ফিরিয়ে আনা হবে। ’

কনটেইনারে করে সিঙ্গাপুর চলে যাওয়া দ্বীন ইসলামের বাসা চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীর বিশ্ব কলোনিতে এবং আল আমিনের বাসা নগরীর পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায়।

তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে মাঝির (লোক সরবরাহকারী) নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটি ও ইয়ার্ডে কাজ করতো।

গত ১৭ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে কনটেইনারবাহী জাহাজ হান্সা ক্যালেডোনিয়া। ২০ মার্চ এক হাজার দু’শ কনটেইনার নিয়ে সেটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ওই জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের মধ্যে আটকা পড়েন দু’শ্রমিক আল আমিন ও দ্বীন ইসলাম।    

গত ১০ এপ্রিল রাতে সিঙ্গাপুরের পাসির পানজাং টার্মিনালের কর্মীরা কনটেইনার খুলে মৃত অবস্থায় আল আমিন এবং কঙ্কালসার অবস্থায় দ্বীন ইসলামকে দেখতে পায়।

দ্বীন ইসলাম বর্তমানে সিঙ্গাপুরের আলেকসান্দ্রা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনা তদন্তে গত ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন নাজমুল আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, বন্দরের উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা) লে.কমান্ডার আকরাম হোসেন, টার্মিনাল ম্যানেজার এনাম আহমেদ এবং প্রধান নিরীক্ষক হাবিবুর রহমান।

কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের কথা বলা হলেও ১১ দিনের মাথায় রোববার প্রতিবেদন দাখিল করতে যাচ্ছে কমিটি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।