ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘খাগড়াছড়ির শনখোলায় মানুষের কঙ্কাল পাওয়ার খবরটি ভিত্তিহীন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১
‘খাগড়াছড়ির শনখোলায় মানুষের কঙ্কাল পাওয়ার খবরটি ভিত্তিহীন’

চট্টগ্রাম: পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড় থানার বড় পিলাকের শনখোলা এলাকায় একটি বাড়ি থেকে বুধবার দুপুরে ২শিশুসহ ৩জনের পোড়া কংকাল পাওয়ার গুজব নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে গুজবের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।



বুধবার দুপুরে এ গুজবের ওপর ভিত্তি করে একটি ইংরেজি দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত একটি নিউজ ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার আবু কালাম সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ প্লাস্টিকের চেয়ারসহ বেশ কিছু পোড়া প্লাস্টিকের জিনিষ উদ্ধার করেছে। চেয়ার পুড়ে গিয়ে বাঁকা হয়ে যাওয়ায় সেটি মানুষের পায়ের হাড়ের মতো দেখাচ্ছে।

তিনি জানান, তারপরেও এসব পোড়া প্লাস্টিকের জিনিস জব্দ করে পুলিশ থানায় নিয়ে এসেছে।

এসপি সিদ্দিক বাংলানিউজকে আরো বলেন, ‘রামগড়ের বড় পিলাকে ভূমি বিরোধে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের পর কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন খবর গত তিন দিনে আমাদের কাছে আসেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত রয়েছে। ’

এ অবস্থায় মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলা করতে একটি মহল গুজব রটাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।  

খাগড়াছড়ির এমপি ও শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ বিষয়ে বলেন, ‘এটি স্রেফ গুজব। ’

পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার সকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে এ ধরনের গুজব রটায় স্বাথান্বেষী মহল। এসময় জেলা এসপিসহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রটি জানায়।

স্থানীয় সাংবাদিক দিলীপ চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বড় পিলাক ও শনখোলা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পিছু এক মণ চালসহ ডাল, তেল ও লবণ বিতরণ করেন। এছাড়া নিহতদের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার এবং আহতদের ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়।

এদিকে মার্মা উন্নয়ন সংসদ এবং মার্মা স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনও ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি  এবং বাঙালিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরন করে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, গত রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের জালিয়াপাড়া ও কচুবাউন্তি এলাকায় এলাকায় ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষে ৪জন বাঙালি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।

এ ঘটনার জের ধরে দুই পক্ষের অর্ধ শতাধিক বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থানীয় সাংসদ, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শান্তি সমাবেশ করেন। এছাড়া এ ঘটনায়  আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তারা।

বাংলাাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।