ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

তারা কি আমাদের সঙ্গে ‘মস্করা’ করছেন?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১
তারা কি আমাদের সঙ্গে ‘মস্করা’ করছেন?

ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা বুধবার দুটো বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এদিন শুনানির শুরুতেই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর হাজিরার সময় আইনজীবীদের এজলাসে প্রবেশ করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।



তিনি বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে যেহেতু তার নিয়োগকৃত কোনও আইনজীবী ছিল না, তাই এজলাসে উপস্থিত থাকার জন্য আইনজীবীরা এলে প্রথমে ১০ থেকে ১২ জনকে থাকার জন্য বলি। পরে যখন দেখি অনেক আইনজীবী উপস্থিত হয়েছেন, তখন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বলি তাদের ১৫ জনকে অ্যালাও করতে। এটা ছোট একটা রুম। এখানে আমরা কত জনকে আর বসতে দিতে পারি? আমি তো রুমে সবাইকে অ্যালাও করে এটাকে হাট বানাতে পারি না। ’
 
তিনি অনেকটা বিরক্তি নিয়েই বলেন, “কাল সকালে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাতে দেখেছি, পরে রাতে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের খবরেও দেখলাম, তারা নিচে মিটিং করছেন, স্লোগান দিচ্ছেন। তারা টেলিভিশনগুলোকে বলছেন, ‘আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি’। আমি একটা কথা বলতে চাই তাদের উদ্দেশ্যে কী? তারা কি আমাদের সঙ্গে ‘মকারি’ (মস্করা) করছেন?”

‘তারা তো কেউ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর এ মামলার নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন না। আইনজীবীদের  ভেতরে নিতাই রায় চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম ছিলেন। দে আর লিডার্স, বাট দে কান্ট কন্ট্রোল আদার্স। ’ বলেন তিনি।  

নিজামুল হক আরও বলেন, ‘আমি একটা কথা আজ পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ভবিষ্যতে এ রকম হলে, উই ক্যান অনলি সে, উই আর সরি। উই শ্যাল নট অ্যালাউ এনি লইয়ার একসেপ্ট দ্য এনগেজড ওয়ানস। ’

আইনজীবীদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত উপ-সম্পাদকীয় নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গত ১৭ এপ্রিল (আসলে হবে ১৪ এপ্রিল) ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ’র স্পেশাল রিপোর্ট এডিটর ডেভিড বার্গম্যানের লেখা এক উপ-সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় ‘ট্রাইব্যুনাল হ্যাজ লস্ট ইটস ব্যাকবোন’।

এ নিয়ে আদালতে উপস্থিত প্রতিবেদক বার্গম্যানকে তার আসনে দাঁড় করিয়ে রেখে তীব্র তিরস্কার করেন ট্রাইব্যুনালে দুই বিচারপতি এ কে এম জহির আহমেদ এবং বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর।

তারা প্রতিবেদকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি সাংবাদিক। আপনার অধিকার রয়েছে লেখার। আপনি একজন বিদেশি সাংবাদিক। আপনি আমাদের লিগ্যাল প্রসিডিং সর্ম্পকে জানেন না। আপনার লেখা প্রতিবেদন আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। কিন্তু যেহেতু এটা প্রথম, তাই আমরা এটা মাফ করে দিলাম। কিন্তু ভবিষ্যতে এ ধরনের অবমাননাকর প্রতিবেদন প্রকাশ করলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। আমরা প্রথমবারের মতো আপনাকে মার্জনা করলাম। (উই শ্যাল বাউন্ড টু টেক দ্য নেসেসারি লিগ্যাল স্টেপস অ্যাকর্ডিং টু ল। উই ফরগিভ ইউ ফর দ্য ফার্স্ট টাইম। )‘

এ সময় ডেভিড বার্গম্যানকে বেশ কিছু সময় দাঁড় করিয়ে রেখে আদালত তাকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেন।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল পৃষ্ঠা ৯-এ নিউ এজ পত্রিকায় একটি উপ-সম্পাদকীয় ছাপা হয়। ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল গোয়িং ইন্ডিপেন্ডেন্ট অর এ রিটার্ন টু বিয়িং দ্য রাবার স্ট্যাম্প’ শিরোনামের ওই উপ-সম্পাদকীয়তে ডেভিড বার্গম্যান লিখেন, ‘একমাত্র আলীম (মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার জয়পুরহাটের আব্দুল আলীম) ছাড়া অন্যদের পিটিশনগুলো খারিজ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল যেসব আদেশ দিচ্ছেন তার কোনও কারণ বলছে না। ট্রাইব্যুনাল নিজামী, মুজাহিদকে নির্দেশ দেন কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। কিন্তু তারপর কোনও কারণ ছাড়াই সেফ হোমে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।