ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: ৪ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জাকিয়া আহমেদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১০
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: ৪ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ঢাকা: জামায়াতের শীর্ষ চার নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিচার শুরুর পর আইনজীবী প্যানেলের প্রধানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।



একই সঙ্গে ২ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন আজকের আদেশ কার্যকরের অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন পেশ করতেও বলেন আদালত।

অভিযুক্ত জামায়াত নেতারা হলেনÑ আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা।

সকাল সাড়ে ১০টায় ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্যানেলের চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিম ও দুই সদস্য এ টি এম ফজলে রাব্বি ও এ কে এম জহিরুল হক এজলাসে আসেন। তাদের আগেই আদালতে হাজির হন প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপুসহ আইনজীবী প্যানেলের সাত সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান।

আদালতে দাঁড়িয়ে ’৫২-র ভাষা আন্দোলন ও ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপু জামায়াতের শীর্ষ চার নেতাকে আটকাদেশের অনুমতি প্রার্থনা করেন।

তিনি বলেন, ‘এ চার নেতাসহ তাদের দোসররা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সংঘটিত বর্বরতম ঘটনায় পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সহযোগীতা করেছিল। তারা বাঙালি নিধনের উল্লাসে মেতে উঠেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী এ চক্র পুরো নয় মাস ধরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে দেশের আনাচে-কানাচে। আজ সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি তারা মুক্ত থাকলে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করবে। এ বিচারপ্রক্রিয়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের আটকাদেশের অনুমতি প্রয়োজন। ’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ০১/২০১০ নম্বর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার আটকাদেশের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

বিচারপতিদের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম আরিফ টিপু বলেন, ‘১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২) ধারায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা জ্বালিয়ে দেওয়া, ধ্বংস করা, ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হলো। এসব কাজে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। ’

তিনি ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটকাদেশ দেওয়ার আবেদন জানান আদালতের কাছে।

এ চারজন বিভিন্ন মামলায় এরইমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন জানিয়ে আদালতকে তিনি আরও বলেন, ‘তারা যেন এ অবস্থায়ই থাকে সে জন্য আবেদন জানাচ্ছি। ’

শুনানী শেষে আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন এবং ২ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

আদালত আজকের আদেশ কার্যকর করার অগ্রগতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন ২ আগস্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে, এ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর আগে পুরো আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা রয়েছেন।

এছাড়া শাহবাগ, কার্জন হল, জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।