ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিডিআর বিদ্রোহ মামলার রায়

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, একজন বেকসুর খালাস

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১১

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ৩৯ বিডিআর ব্যাটালিয়নে (বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত ২১ জনের মধ্যে ২০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ১ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত।

এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়।



চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন সদরে স্থাপিত বিশেষ আদালত-১২ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় এ রায় ঘোষণা  করেন।

বিশেষ আদালতে সভাপতিত্ব করেন, বিজিবি রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এহিয়া আজম খান। আদালতের অপর ২ ছিলেন, লে. কর্নেল গাজী খালিদ হোসেন এবং লে. কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম।

আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাংক শেখর সরকার। এছাড়া স্পেশাল প্রসিকিউটর হিসেবে অ্যাড. মোকলেসুর রহমান ও অ্যাড. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত থেকে বিচার কাজে সহায়তা করেন।

রায়ে সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, ল্যান্স নায়েক তাউস মিয়া ও সিপাহী মজিবুর রহমান (প্রত্যেকে ৬ বছর), চালক আব্দুল মান্নান (৫ বছর), শিকদার জাহিদুল ইসলাম (৪ বছর), ল্যান্স নায়েক শফিকুর রহমান আবুল বাশার, রনি আহমেদ ও রুহুল আমিন (প্রত্যেকে ৩ বছর), আব্দুল ওয়াজেদ প্রামানিক ও আব্দুর রহিম (প্রত্যেকে ২ বছর ৬ মাস), নজরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম (প্রত্যেকে ২ বছর), সুবেদার মোস্তফা মিয়া, হাবিলদার বেনুয়ার রহমান, হাবিলদার রুহুল আমিন, নায়েক এস্কান্দার আলী ও সিপাহী মোশফেকুর রহমান (প্রত্যেকে ১ বছর ৬ মাস) , নায়েক রহমত আলী ও হাবিলদার পঞ্চানন দাস (প্রত্যেকে ১ বছর) এবং জামাল মিয়া (৬ মাস)।

এদিকে সিপাহী সৈয়দ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, এ মামলায় প্রসিকিউটর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু বকর আবু গত ২২ মার্চ আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর আসামিরা আদালতে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উভয়ের বক্তব্য শোনার পর আদালত ১২ এপ্রিল রায়ের দিন ধার্য করেন।
গত ২০ মার্চ অভিযুক্ত ২১ জওয়ানের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। আদালত ওই দিন ৪ জন ও পরদিন ২১ মার্চ ২১ জনসহ মোট ২৫ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

মামলার প্রসিকিউটর ও ৩৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু বকর আবু অভিযোগে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি চাঁপাআসবাবগঞে। জর বিডিআর ব্যাটালিয়নে বিদ্রোহ সংগঠিত করেন। অভিযুক্তরা  ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার ভেঙ্গে অস্ত্র লুণ্ঠন ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনগণের মাঝে ভীতির সঞ্চার করেন। তারা শৃংখলা ভঙ্গ করে পিলখানার বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের সংগে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
     
২১ জওয়ানের মধ্যে ৬ জন অভিযুক্ত, হাবিলদার রুহুল আমিন, নায়েক এস্কান্দার আলী, নায়েক রহমত আলী, সিপাহী চালক আব্দুর রহিম, সিপাহী আবুল বাশার, সিপাহী পঞ্চানন দাস, সিপাহী মুহাম্মদ রুহুল আমিন শিকদার আদালতে দোষ স্বীকার করে গত রোববার আদালতের কাছে অনুকম্পা প্রার্থনা করেন। বাকিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

২০০৯ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩৯ রাইফেল্স ব্যাটালিয়নের ৩০ বিডিআর জওয়ানের সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে সদর থানায় একই বছরের ১৮ মে মামলা দায়ের করেন।

মামলার পরে একই দিন বিডিআর ক্যাম্প থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাসুদেব রায় এর আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।