ঢাকা: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা রেখেই সংবিধান সংশোধন করা হবে। ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানে ইসলামের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও সমান অধিকার ভোগ করবে।
এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাতে কোনভাবেই ৯০ দিনের বেশি থাকতে না পারে সে বিধান রেখেই সংবিধান সংশোধন করা হবে।
সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংবিধান সংশোধন কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
বৈঠকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ গুলো নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় প্রস্তাব করা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বা মেয়াদকালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ছাড়া অন্য কোনো অধ্যাদেশ জারি করতে পারবে না। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির আর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে না।
এছাড়া সংবিধানে পরিবেশ, সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার অধিকার- এ তিনটি অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হবে।
সংসদে নারীর আসন সংখ্যা ১০০ তে উন্নীত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কিভাবে নারী আসন সংখ্যা বাড়ানো যায় সে ব্যপারে আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সূত্র আরো জানায়।
বৈঠক শেষে সংবিধান সংশোধন বিশেষ কমিটির সদস্য এ্যডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা সংবিধানের অনুচ্ছেদ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টায় গণভবনে আমরা আবার বৈঠকে বসবো। বৈঠকে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ’
সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটির এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ এ সভা শুরু হয়। রাত ১২টায় বৈঠক শেষ হয়।
এতে সংবিধানের ধারাগুলো নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবার বসবে।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের লক্ষে বিশেষ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ বৈঠকে মিলিত হন। মে মাসে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব আনা হবে। এ লক্ষে বিশেষ কমিটি কাজ করে যাচ্ছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, নারীর অধিকার, রাষ্ট্রধর্ম, ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা এ বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সূত্র আরো জানিয়েছে, এ পর্যন্ত কমিটির বৈঠকগুলোতে সংবিধান সংশোধনের জন্য যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে ও প্রস্তাব এসেছে, সেসব বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে বৈঠকে অবহিত করা হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সংবিধান সংশোধন বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সভায় সংবিধান সংশোধন কমিটির চেয়ারম্যান সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কমিটির সদস্য আমীর হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রাশেদ খান মেনন, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী, ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী, ড. হাছান মাহমুদসহ কমিটি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১:৪২ ঘন্টা, এপ্রিল ১২,২০১১