ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চারুকলায় প্রস্তুতি দেখে বোঝা যায় বৈশাখ আসছে

ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১১
চারুকলায় প্রস্তুতি দেখে বোঝা যায় বৈশাখ আসছে

ঢাকা: চৈত্রের খর রোদে হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝুম বৃষ্টি। উন্মত্ত ঝড়ে কাল বৈশাখীর চিরচেনা রূপে প্রকৃতিতে বৈশাখের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।

কেবল প্রকৃতি কেন, চারুকলা ইনস্টিটিউটে বর্ষবরণের প্রস্তুতি দেখেও যে কেউই বুঝে যাবেন দুয়ারে বৈশাখ কড়া নাড়ছে।

প্রকৃতির উš§ত্ততা, খর রোদ কিংবা হঠাৎ বৃষ্টি কোনও কিছুই চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখতে পারছে না। পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে ব্যস্ত দশম ব্যাচের চঞ্চল, রাজু, সেবা, রফি। ওদের দেখভাল করছেন শিক্ষকরা।

রাজধানীতে বর্ষবরণের হাজারো আয়োজনের মাঝেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ঐতিহ্যবাহী এ মঙ্গল শোভাযাত্রার আবেদন ভিন্ন।

১৯৮৯ সালে চারুকলার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী সবাই মিলে প্রথমবারের মতো মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। এরপর বিগত প্রায় দুই যুগ ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়ে উঠেছে বৈশাখ উদযাপনের প্রধান অনুষঙ্গ।

মাঝে দু’বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা বাণিজ্যিক পৃষ্ঠপোষকের খপ্পরে পড়ে অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। এতে অসন্তোষ দেখা দেয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তাই বিজ্ঞাপনের অর্থ বাদ দিয়ে নিজেরাই অর্থের সংস্থানে নেমে পড়েন। তারা প্রমাণ করেছেন, প্রকৃতির বাধাই যেখানে তুচ্ছ সেখানে টাকার অভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজ থেমে থাকবেÑএটা হতেই পারে না।

জ্যেষ্ঠ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানালেন, বাণিজ্যিক পৃষ্ঠপোষক ও তাদের বিজ্ঞাপনের আধিপত্যে মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাণের ছোঁয়ায় ঘাটতি দেখা দেয়। বেনিয়া প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হয়ে বিপুল অর্থ ব্যয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনে জৌলুস থাকলেও প্রাণ থাকে না।

তাই পৃষ্ঠপোষক ছাড়াই নিজেদের টাকায় শোভাযাত্রা আয়োজনে আবারও প্রাণের ছোঁয়া ফিরে এসেছে বলে দাবি করেন তারা।

এবারও নিজেদের শ্রম আর শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন চলছে।

তারা প্রমাণ করেছেন, আন্তরিকতা থাকলে অর্থ কোনও বাধা হতে পারে না।

শিক্ষার্থীরা রং তুলি নিয়ে বসেছেন। কেউ রং তুলি নিয়ে ছবি আঁকছেন। কেউ মাটির সরায় শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলছেন। কেউবা মুখোশ তৈরি করছেন। আর সেগুলো বিক্রিও করছেন নিজেরাই। আর সন্তুষ্ট চিত্তে এসব শিল্পকর্ম কিনে সমর্থন দেওয়ার শুভানুধ্যায়ীরও অভাব হয়নি। এভাবে অনায়াসেই শোভাযাত্রার সাজসজ্জার অর্থ জোগাড় হচ্ছে।

এবারও ছবি আর সরা বিক্রি করে পাওয়া টাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে বলে জানালেন রাজু।

নিজেদের টাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের কাজ পুরোদমে এগিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে তৃপ্তির ছাপ স্পষ্ট।

সেবা গর্বের সঙ্গে বললেন, ‘আমরা নিজেরাই সব করছি। টাকাও জোগাড় করছি নিজেরাই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।