ঢাকা: মানিলন্ডারিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মানিলন্ডারিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রীপরিষদের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী থাকি আর না থাকি অপরাধীদের কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
এ সংক্রান্ত যেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে সেগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দেন তিনি।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের হত্যাকা- বন্ধের জন্য জোরালো এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদের সভায় তিনি বলেন, মানুষ হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিডিআর-বিএসএফ আলোচনা যাতে ফলপ্রসু হয় এবং ভবিষ্যতে যাতে সাধারণ নাগরিক হত্যাকা-ের শিকার না হয় এবং এই হত্যাকা- যাতে বন্ধ হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সভায় সভায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের অর্থ সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।
সূত্র আরও জানায়, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে সীমান্তে হত্যাকা- সংহঠিত হয়ে আসছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন এ হত্যাকা- বন্ধের জন্য তারা কোনো শক্ত অবস্থান নেয়নি।
বিজিবি-বিএসএফ আলোচনায় উভয় পক্ষই যাতে বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেয় এবং যত্নবান হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া টিপাইমুখ বাঁধসহ অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক যেসব বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে সেগুলো অগ্রসর করা এবং সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষভাবে তদারকি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সুত্র আরও জানায়।
সভা শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মন্ত্রীদের অর্থ-সম্পদের হিসাব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেছেন নির্বাচনের আগে আপনারা নির্বাচন কমিশনে যে হিসাব জমাদিয়েছিলেন সেটা আপডেট করে ক্যাবিনেটের কাছে জমা দিয়ে দেন। এসময় মন্ত্রীরা তাদের সম্পদের হিসাবের পাশাপাশি সরকারি কর্মর্তাদের সম্পদের হিসাবও জমা দেয়া উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
অর্থমন্ত্রণালয় থেকে সম্পদের হিসাব বর্ণার নির্দিষ্ট ফরম সম্বলিত চিঠি পাওয়ার পর মন্ত্রীরা তাদের অর্থ সম্পদের হিসাব জমা দেবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সভায় জানানো হয়েছে।
সুত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রস্তাবিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে যাতে কোনো জটিলতা বা সমস্যা তৈরি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের আগেই দিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে যাতে ভুল বোঝাবোঝি না হয়, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় নির্মাণ কাজ শুরু করতে দেরি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যে জায়গার উপর দিয়ে নির্মাণ করা হবে তার শতকরা ৮০ ভাগই সরকারি জায়গা। মাত্র ২০ ভাগ বেসরকারি জায়গা পড়বে বলে মন্ত্রিপরিষদ সভায় জানানো হয়েছে। তবে বেসরকারি জায়গা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যেমন কমলাপুর এলাকার গোলাপ যেখানে বস্তি রয়েছে সেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঘুড়িয়ে নিয়ে ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত করা দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টি বিবেচনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময় ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১১