ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি নিয়ে তোলপাড়

সাঈদুর রহমান রিমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১১

ঢাকা: রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) গাইনি ওয়ার্ড থেকে অভিনব কৌশলে এক নবজাতক চুরির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে হাসপাতালের ৬ তলার ওয়ার্ড থেকে নার্স পরিচয়ে বোরকা পরিহিত এক মহিলা ওই নবজাতককে চুরি করে নিয়ে যায়।



এ ঘটনায় হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশে নবজাতকের সন্ধানে পুরো হাসপাতাল জুড়ে তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি কোতোয়ালী থানা পুলিশ শুরু করেছে অভিযান। এরইমধ্যে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ৭ জন নার্স ও চার জন আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে সোমবার রাত সাড়ে ৮ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চুরি হওয়া নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

নবজাতক শিশুপুত্র’র বাবা মো. সুমন মিয়া (৩২) ও মা সালমা বেগম (২৫)। তারা রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার ধুপখোলায় বসবাস করেন। দাম্পত্য জীবনের প্রথম সন্তানকে হারিয়ে পিতা-মাতা দু’জনই শোককাতর হয়ে পড়েছেন।
 
কান্নাজড়িত কন্ঠে মো. সুমন মিয়া বাংলানিউজকে জানান, শনিবার দুপুরে প্রসব বেদনা ওঠার পর পরই তিনি স্ত্রী সালমা বেগমকে নিয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। শনিবার রাতেই অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন সালমা। এরপর নবজাতক ও মাকে গাইনি বিভাগের দুই নম্বর ইউনিটে রাখা হয়।

তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে বোরকা পরিহিত একজন মহিলা নিজেকে নার্স পরিচয় দিয়ে দুই নম্বর ইউনিটে ঢুকে। তিনি স্ত্রীকে জানান হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে-শিগগির কাপড় চোপর গুছিয়ে তার সঙ্গে নিচে নামতে হবে।

নিচতলার একটি কক্ষে নবজাতককে টিকা দেওয়া হবে বলেই বোরকা পরিহিত মহিলা শিশুটিকে নিজের কোলে তুলে নেন। নিচতলায় নেমে সালমাকে একটি চেয়ারে বসিয়ে সুমন মিয়াকে টিকিট কাটার জন্য হাসপাতালেরই কাউন্টারে পাঠানো হয়। এর ফাঁকেই নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় বোরকা পরিহিত মহিলা।

সুমন মিয়া হাসপাতালের কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে ফিরে আর মহিলা তার শিশুপুত্রকে দেখতে পাননি। এরপর থেকেই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। বিকেলেই সুমন মিয়া শিশু চুরির ঘটনায় হাসপাতালের নার্স-আয়াদের একটি চক্র জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম ফরিদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, নবজাতক চুরির অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো হাসপাতাল এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, ‘নবজাতক চুরির ঘটনাটি বড়ই মর্মস্পর্শী। অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। ’

সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুপুত্রের সন্ধান না পেয়ে সুমন মিয়া কোতোয়ালী থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন খান বাংলানিউজকে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সেখানে সন্দেহভাজন নার্স-আয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ওসি বলেন, নবজাতকের সন্ধানে পুলিশ এরইমধ্যে কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছে। এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছেন ওসি সালাহউদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।