ঢাকা: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বড় নদী কালনী থেকে কুশিয়ারা পর্যন্ত নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১০ কোটি টাকা।
প্রকল্পটি মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠছে। এটি ছাড়াও আরও ৭টি প্রকল্প বৈঠকে ওঠার কথা।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনার সভায় সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবে এ সভা ।
এ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ৫টি জেলায় মানুষ বন্যার হাত থেকে মুক্তি পাবে। সেই সঙ্গে এ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
৫টি জেলার ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৬শ হেক্টর এলাকাব্যাপী বিস্তৃত এ নদী। প্রকল্প এলাকা সিলেটের দক্ষিণে এবং ভৈরব বাজারের পূর্বে অবস্থিত।
কিশোরগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলার আওতাধীন এ নদী অবস্থিত। তবে প্রকল্প অফিস হচ্ছে কিশোরগঞ্জ।
পরিকল্পনা কমিশনের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার একনেক সভায় মোট ৮টি প্রকল্প উঠছে। দু’টি প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে একটি কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা অন্যটি ৭৫৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১০টি ড্রেজার, ক্রেনবোট, টাগবোট, অফিসার হাউজ বোট এবং ক্রু- হাউজ বোটসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ প্রজেক্ট।
জানা যায়, কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি অনুমোদন হলে ২০১৪ সালে শেষ করা হবে। আর বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
এ প্রকল্পর মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে-কালনী-কুশিয়ারা নদীর দীর্ঘ মেয়াদী সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা। শুল্ক মৌসুমে এ নদীতে নৌ-চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও বর্ষা উত্তর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষির ক্ষতি কমানো। সেই সঙ্গে ভূমিহীন ১ হাজার ২৫০ পরিবার বন্যামুক্ত নতুন নিরাপদ গ্রাম গড়ে তোলা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে পরিচালিত একটি প্রাক সমীক্ষা প্রতিবেদনে নদীগুলোর প্রবাহ হারিয়ে ফেলার কারণ চিহিৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি নদীগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য নদী শাসন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং এর সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনার জন্য মার্চ ১৯৯৮ সালে কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (সিআইডিএ) অর্থায়নে ফুড একশন প্লান-৬ (এফএপি-৬) এর আওতায় নতুন সমীক্ষা করা হয়। এ প্রতিবেদন দেওয়া হয় ২০১০ সালে। এখানে প্রকল্প ব্যায় নির্ধারণ করা হয় ৭৭১ কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছর জানুয়ারি ৫ তারিখে পিইসি সভায় উপস্থাপন করা হয়। পিইসি সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ৬০৯ কোটি ৮৩ লাখ ৩১ হাজার টাকার প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ঘণ্টা ০৪ এপ্রিল ২০১১