ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মালিকপক্ষের দ্বন্দ্বের জের

সনদ না পেয়ে সাউদার্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেণ্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১১

চট্টগ্রাম: পাশের সনদ দেওয়ার দাবিতে বেসরকারি সাউদার্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদীবাগ ক্যাম্পাসে শুক্রবার সকালে কয়েকশ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা ক্যাম্পাসে ভাংচুরও করে।



পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূল ক্যাম্পাসের বাইরে বাকি তিনটি ক্যাম্পাসের কয়েক’শ শিক্ষার্থীর এমবিএ পরীক্ষায় পাশের সনদ আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা।

এরআগে সকাল ১০টার দিকে নগরীর হালিশহর, জিইসি ও দামপাড়া ক্যাম্পাসের কয়েক’শ শিক্ষার্থী মেহেদীবাগে মূল ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হন। এসময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের মূল ভবনের ভেতর ঢুকতে বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠে। তারা ভবনের সামনে একটি কক্ষের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শ্লোগান দিয়ে সনদ প্রদানের দাবি জানান।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা মূল ভবন ছেড়ে বেরিয়ে রাস্তায় অবস্থা নেয়।

পরে মালিকদের দু’পক্ষ, বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন এবং বিশ্ববিদালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সরওয়ার জাহান এবং সিনিয়র এক শিক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসেন পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার ব্যবসায়িক পার্টনার ও পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, দশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নগরীর হালিশহরে ক্যাম্পাস খোলার অনুমতি নিয়েছি। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে তার এ সংক্রান্ত লিখিত চুক্তিও হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চার বছরে হালিশহরে যখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা মেহেদীবাগ থেকে বেড়ে গেছে তখন উনার (প্রতিষ্ঠাতা) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। উনি এখন শিক্ষার্থীদের সনদ আটকে শাখা ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ করে দিতে চাচ্ছেন। ভবিষ্যতে সব শিক্ষার্থী শুধু মেহেদীবাগ ক্যাম্পাসে ভর্তি হোক এটাই তিনি চান। ’

অপর ব্যবসায়িক পার্টনার ও পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ওসমান রানা বাংলানিউজকে বলেন, ‘উনারা চার’শ ছাত্রছাত্রীকে বিভ্রান্ত করে জিইসি মোড় ও হালিশহর ক্যাম্পাস থেকে মেহেদীবাগে নিয়ে এসেছেন। উনারা আমার হক মেরে দিয়েছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে। ’

জিইসি ক্যাম্পাস থেকে এমবিএ পাশ করা শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দু’বছর আগে এমবিএ পাশ করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের এখনো সনদ দেয়নি। মালিকদের সমস্যার কারণে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। ’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিএমপির কোতয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার জেদান আল মুসা বাংলানিউজকে বলেন, ‘একাধিক ক্যাম্পাস নিয়ে দ্বন্দ্বে মালিকরা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। মালিকদের মধ্যে দু’জন পার্টনার ছাত্রদের এখানে জড়ো করেছেন। ’

বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলেও প্রতিষ্ঠাতা সরওয়ার জাহান কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

বৈঠক শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক সালেহ জহুর জানান, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পাশ করা সব ছাত্রছাত্রীর নম্বরপত্রসহ নামের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে।
এরপর তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের সনদ দেওয়া হবে।

এ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ