সিলেট: সাড়ে ৩ হাজার বছর পুরনো ঐতিহ্যসমৃদ্ধ মণিপুরী ভাষাউৎসবে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠ। শুক্রবার সকালে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
ঐতিহ্যবাহী এ ভাষার লালন, গবেষণা এবং প্রাতিষ্ঠানিক চর্চার জোরালো দাবি ও অঙ্গীকার নিয়ে এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদ।
শুক্রবার সকাল থেকেই নগরীর জিন্দাবাজারে দি এইডেড হাইস্কুলে শুরু হয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। স্কুলমাঠ সাজানো হয় অসংখ্য পোস্টার আর মণিপুরী ঘরানার নানা রঙের কারুকার্যে। উৎসবের এই আনন্দে উচ্ছল হয়ে ওঠে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া থেকে আগত শিশু, বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণীসহ হাজারো মণিপুরী আদিবাসী।
সকালে স্কুলমাঠে পতাকা ওঠানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভাষাউৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় মনিপুরী সাহিত্য সংসদের শিল্পীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশেন করেন। পরে স্কুল মিলনায়তনে মণিপুরী ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে শোভাযাত্রাসহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তক অর্পণ করা হয়।
সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মনিপুরী কবি এ কে শেরামের সভাপতিত্বে এবং শংকর বাবুর পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম, সাংবাদিক রফিকুর রহমান লজু এবং দি এইডেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ এনায়েত হোসেন।
আলোচনা সভায় বক্তরা বলেন, ‘বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো বিকাশ ও চর্চার জন্য সচেতন মহল, রাষ্ট্র ও সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। মণিপুরী ভাষায় উঁচু মানের সাহিত্য রয়েছে। সংখ্যালুঘুতার কারণে এ ভাষা হারিয়ে যেতে পারেনা। ’
আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে ভাষা উৎসব স্মারক সংকলন ‘মৈরা’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল মণিপুরী ভাষার পরীক্ষা, মণিপুরী ভাষায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোপর্ব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মণিপুরী কৃষ্ণনৃত্যে, সাধারণ মণিপুরী নৃত্যে, গানসহ মণিপুরীর সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১১