চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জতে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় বুধবার আদালতে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন দুই জওয়ানের স্ত্রী।
নগরীর হালিশহরে ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নে স্থাপিত বিশেষ আদালত-১৬ তে বুধবার সকাল ৯টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
বুধবার বিশেষ আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে সর্বশেষ ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এনিয়ে মোট ৭৮ জনের সাক্ষী নেওয়া হয়েছে।
সাফাই সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হচ্ছেন, হাবিলদার হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী পারভীন আক্তার ও সিপাহী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রূপনা বেগম।
আদালতে স্বামীকে নির্দোষ দাবি করে পারভীন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী হেলাল উদ্দিন বিদ্রোহের দিন সকালে বাসায় চলে যান। শরীর খারাপ থাকায় এসময় তিনি চা-নাস্তা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তার ঘুম ভাঙ্গে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। ’
অন্যদিকে রূপনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী হাবিবুর রহমান বিদ্রোহের আভাস পেয়ে সকালে বাসায় যাবার পর আমি তাকে ঘরে আটকে রাখি। ’
বিশেষ আদালতে প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালনকারী লে.কর্নেল শামীমুর রহমান বাংলানিউজকে দু’আসামির স্ত্রীর সাফাই সাক্ষ্যে দেওয়া বক্তব্যের বিষয় জানিয়েছেন।
এছাড়া বুধবার বাদিপক্ষে আদালতে সাক্ষ্য দানকারীদের মধ্যে আছেন, নায়েক সুবেদার ফারুক, হাবিলদার হারুন, সিপাহী আলতাফ, নায়েক আনিস, ল্যান্স নায়েক শাহনূর, নায়েক সুবেদার সিদ্দিক, সিপাহী সিরাজ, সিপাহী আরিফ, সিপাহী হাবিব, সিপাহী রিয়াজ এবং ল্যান্স নায়েক শাহ আলম।
এরা সবাই বর্তমানে বিজিবি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন এবং তারা সবাই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে প্রসিকিউটর বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
গত ১৬ মার্চ বিচার কার্যক্রম শুরুর পর এ নিয়ে গত আটদিনে এ মামলার মোট ১৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৮ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসিকিউটর লে.কর্ণেল শামীমুর রহমান বলেন, ‘৭৮ জনের সাক্ষ্য অভিযোগ প্রমাণে যথেষ্ট বলে আমরা মনে করছি। এ কারণে আদালত প্রসিকিউশন পক্ষে সাক্ষ্য নেওয়া শেষ ঘোষণা করেছেন। ’
প্রসিকিউটর জানান, আগামী ৫ এপ্রিল থেকে আদালতে আসামিদের বক্তব্য গ্রহণ শুরু হবে। এরপর বাদি ও বিবাদী পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হবে।
এর আগে ১৫ মার্চ সাতকানিয়ায় বাইতুল ইজ্জত ট্রেনিং সেণ্টার অ্যান্ড স্কুলে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ১৫৩ জন জওয়ানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়।
বিশেষ আদালতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কর্নেল মো. বশিরুল ইসলাম। তাকে বিচারকাজে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গৌতম কুমার রায়, লে. কর্ণেল মো. আবদুর রউফ ও মেজর এম এ রাকিব।
উল্লেখ্য ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দেশের একমাত্র বিডিআর ট্রেনিং সেন্টার বাইতুল ইজ্জতের বিডিআর জওয়ানরা।
এসময় তারা অগ্নিসংযোগ,অস্ত্র লুট, হামলা, মারধর এবং সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
পরে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে ১৫৩ জন জওয়ানকে অভিযুক্ত করে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১১