ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিজেল সঙ্কটে উত্তরাঞ্চলের ৯ জেলা

পার্বতীপুর সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১১

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ও বণ্টনে সমন্বয়হীনতার কারণে উত্তরাঞ্চলের ৯ জেলায় ডিজেলের সঙ্কট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।

এ সুযোগে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী ডিজেলের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে লিটারপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছে।

চলতি ইরি-বোরোর ভরা মৌসুমে সেচ সঙ্কট দেখা দেওয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার রংপুর বিভাগীয় কমিশনার (ডিসি) তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, ডিলার, এজেন্ট, কৃষি বিভাগ, সাংবাদিকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ হল রুমে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শামসুল আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের উপ-পরিচালক সেকেন্দার আলী, পার্বতীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুজিব-উল-ফেরদৌস, যমুনা অয়েল কোম্পানি (বগুড়া) সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক আব্দুস সবুর খান, পদ্মা অয়েল কোম্পানির (বগুড়া) সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক শহীদ উদ্দিন আহম্মেদসহ ৯ জেলার জ্বালানি তেল সরবরাহের ডিলার, এজেন্ট ও স্থানীয় সাংবাদিক।

মতবিনিময় সভায় বলা হয়, পার্বতীপুরে অবস্থিত ১ কোটি ১১ লাখ লিটার (ডিজেল) ধারণ ক্ষমতার পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপো থেকে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলায় ১৪৭ জন ডিলার এবং ২২১ জন এজেন্টের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের অধীন পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তা পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে এ ডিপোতে মজুদের পরিমাণ শূন্যের   কোঠায়।

সভায় জানানো হয়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ভরা সেচ মৌসুমে এ অঞ্চলে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ লাখ লিটার ডিজেলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ লিটার।

এ বিষয়ে পার্বতীপুর অয়েল ডিপো ইনচার্জ হেমায়েত উদ্দিন জানান,  ইতোপূর্বে সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে ডিজেল চালিত ঠাকুরগাঁও ৫০ মেগাওয়াট  রেন্টাল বিদ্যুৎ-কেন্দ্র ও রংপুর ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ-কেন্দ্রে ডিজেল সরবরাহ করা হতো। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে পার্বতীপুর ডিপো থেকে ওই দুটি বিদ্যুৎ-কেন্দ্রে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, ডিজেলচালিত এ দুটি বিদ্যুৎ-কেন্দ্রে ১ দিন পর পর ৬ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করতে হচ্ছে। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত প্রায় ১০০ হিমাগারে জেনারেটর চালাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ লিটার অতিরিক্ত ডিজেল খরচ হচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম থেকে খুলনা এবং সেখান থেকে রেল ট্যাংকারে করে জ্বালানি তেল পার্বতীপুরে এসে পৌঁছাতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ দিন। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া গেলে সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে পার্বতীপুরে রেল ট্যাংকারে করে ৭ দিনের মধ্যে তা নিয়ে আসা সম্ভব।

মতবিনিময় সভায় আরো জানানো হয়, ডিজেলুচালিত ঠাকুরগাঁও ও রংপুর বিদ্যুৎ-কেন্দ্র আগের মতো সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে ডিজেল পরিবহন করলে ও রেলের মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে পরিবহন করা হলে এবং বিদ্যুৎ-কেন্দ্রগুলোতে মজুদের পরিমাণ বাড়ানো হলে জ্বালানি সঙ্কট এড়ানো সম্ভব হবে।

মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জসিম উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।