ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কুষ্টিয়ার গণবাহিনীর শীর্ষ নেতা আনু ভারতে খুন!

শরীফ বিশ্বাস, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১১

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর শীর্ষ নেতা আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (৫৫) ভারতে খুন হয়েছেন।

১৫ মার্চ রাত ১টার দিকে ভারতের নদীয় জেলার চাপড়া থানার ছোট আন্দুলা গ্রামে আনু খুন হয়েছেন এমন সংবাদ নিশ্চিত করেছেন গণবাহিনীর ঘোর শত্র“ গণমুক্তিফৌজের সামরিক শাখা প্রধান বাদশা।



গলায় রশি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে খুন করা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাদশা পরিচয়ে এক ব্যক্তি ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি এলাকা থেকে কুষ্টিয়ার সাংবাদিকদেরকে সেলফোনে এমন সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যক্তি নিজেকে গণমুক্তিফৌজের সামরিক শাখা প্রধান বাদশা বলে দাবি করে জানান, হত্যাকাণ্ডটি তিনি নিজেই ঘটিয়েছেন।

বাদশা ফোনে বলেন, ‘জাসদ গণবাহিনীর শীর্ষ নেতা আইনাল আমাদের প্রতিপ। সে কুষ্টিয়ার সংখ্যালঘু সুজিত ও রনজিতের হত্যাকারী। এসব অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ’

তিনি আরও জানান, নদীয়া জেলার চাপড়া থানার ছোট আন্দুলা গ্রামে তার নিজ বাড়িতে গোপন বৈঠকের সময় হানা দেওয়া হয়। আনুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এছাড়া সেখানে বৈঠককালে আনুর আরো ৩ সহযোগীও তাদের হামলায় আহত হয়। এসময় তার কাছ থেকে আনু’র ব্যবহৃত ২টি ভারতীয় মোবাইল ফোন, বাংলাদেশী ৫টি সিটিসেল মোবাইল সিম, ৪৯টি বাংলাদেশি এবং ভারতীয় ৫টি সিম পাওয়া যায়।

বাদশা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি জাসদ গণবাহিনীর আরেক নেতা লাল হত্যার ঘটনায় আমার নেতা মুকুল ও শাহীন ফেঁসে যায়। তবে এবার আমরা আনুকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলেছি। ’
এব্যাপারে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগুনা জেলার ডিএসপি সমরেন্দ্র দাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আনু আমার জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনার লাগোয়া নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থানার ভালুকা গ্রামে বসবাস করে আসছিল। যে নাম্বার থেকে আনুর মৃত্যু সংবাদ বাংলাদেশে জানানো হয়েছে সেই নাম্বার আনুরই। ’

তবে তিনি আনুর মৃত্যুর বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘মৃত্যুর সংবাদ তাদের জানা নেই। তাছাড়া আমরা খোঁজ-খবর নিয়েছি। আরো নিচ্ছি। তবে আনু ও তার দলবল হত্যাকাণ্ডের সংবাদটি নিজেরাই রটিয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘আনু ও তার বেশ কয়েকজন সহযোগী ভারতে অবস্থা করছে বলে শুনেছি। ’
 
এদিকে আনুর মৃত্যু সংবাদ সঠিক কিনা কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সিএ হালিমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এমন উড়ো সংবাদ শোনা যাচ্ছে, তবে এর কোনও ভিত্তি পাচ্ছিনা। ’

তিনি জানান, আনু  পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় ১০টি হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, আনু ১৯৯৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নিকট জাসদ গণবাহিনীর শীর্ষ নেতা কসাই সিরাজসহ অস্ত্রসমর্পণ করেছিল। জেল থেকে বেরিয়ে সে ভারতে পালিয়ে যায়। সেখান থেকেই জাসদ গণবাহিনীর পরিচালনা করে আসছিল। সিরাজ বর্তমানে জেলে রয়েছে।
 
আনু কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের বাসিন্দা।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।