ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

না’গঞ্জে আবারও বেপরোয়া ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নূর হোসেন

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১১

নারায়ণগঞ্জ: নূর হোসেন ওরফে হোসেন চেয়ারম্যান। তিনি আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।

গত ১ মার্চও ইন্টারপোল নূর হোসেনের ওয়ারেন্টের পাতা মোডিফাই করেছে। কিন্তু নূর হোসেন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

তবে ইন্টারপোল ওয়ারেন্ট থাকলেও শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কে প্রস্তাবিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তির ওপর আপত্তি ও মতামত বিষয়ক গণশুনানিতে স্থানীয় রাজনীতিক আর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানেও তিনি তার পরিচয় জানান দেন অনেকটা সন্ত্রাসী কায়দাতেই। লোকজনের উপস্থিতিতেই তিনি এক ব্যক্তিকে মারধর করার চেষ্টা করেন। এসময় উচ্চৈ:স্বরে ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে গালমন্দও করেছেন তিনি।

উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, নূর হোসেনের এমন আচরণে সম্মেলনকরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট হয়।

উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সীমানা নির্ধারণ ও এলাকার অন্তর্ভূক্তি নিয়ে জেলা প্রশাসন গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কে গণবিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে মতামত ও আপত্তি নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত হয়েছিলেন নূর হোসেন। শুনানিতে সঞ্চালকের ভূমিকাতে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এম সামছুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ বিজ্ঞপ্তিতে আপত্তি করা লোকজন।

গণশুনানি চলাকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার রেবতী মোহন পাইলট স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান মোল্লা তার বক্তব্যে সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভূক্ত না করার আহবান জানান। তার এ বক্তব্যের মাঝখানেই চটে যান নূর হোসেন। এক পর্যায়ে বক্তব্য শেষ করার আগেই মতিউর রহমান মোল্লাকে থামিয়ে দিয়ে তাকে মারতে তেড়ে যান নূর হোসেন।

এসময় সম্মেলন কে তুমুল হট্টগোল ও হৈ চৈ শুরু হয়। মোল্লাকে উদ্দেশ্য করে নূর হোসেন গালমন্দও করেন। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি শামীম ওসমান নিজে মোল্লাকে ডেকে বাইরে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

তবে ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত একজন সন্ত্রাসীর এহেন আচরণে উপস্থিত সাধারণ লোকজনের মাঝে ােভের সৃষ্টি হয়। তবে তারা প্রভাবশালীদের ভয়ে কোনও মন্তব্য কিংবা প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি।

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে শামীম ওসমান নিজে উদ্যোগী হয়ে নূর হোসেন ও মতিউর মোল্লাকে ডেকে নিয়ে আপোষ করিয়ে দেন। পরে তারা একসঙ্গে এসময় তারা ফটোসেশনও করেন।

প্রসঙ্গত এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের এএসপি (ক অঞ্চল) জিয়াউলের সঙ্গে বৈঠক করে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল নূর হোসেন। তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় বিভিন্ন অপরাধে ১৩টি মামলা রয়েছে। তবে  সবগুলো মামলায় তিনি জামিনপ্রাপ্ত।

২০০৭ সালের ১২ এপ্রিল আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল নূর হোসেনের বিরুদ্ধে রেড ওয়ান্টে জারি করে। সর্বশেষ শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় খোঁজ নেওয়া পর্যন্ত ওই ওয়ারেন্ট বলবৎ ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।