ঢাকা: জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংবিধান সংশোধন বিশেষ কমিটির সদস্যরা।
তারা জানান, সংবিধান সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব দ্রুত তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে কমিটি।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কমিটির সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করে প্রস্তাব তৈরি করছি। সংসদের আগামী অধিবেশনে সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
তবে কমিটির কো-চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বাংলানিউজকে বলেছেন, সংবিধানের ধারাগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। সংশোধনী প্রস্তাব সংসদে কবে উপস্থাপন করা হবে সে ব্যাপারে রোববারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিটি সসদ্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুও একই কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের ধারাগুলো পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি। কোনটা বাদ যাবে, কোনটা সংশোধন হবে সব বিষয়েই আলোচনা হচ্ছে।
তবে সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে কি-না, তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি এদের কেউই।
তবে কমিটির অন্য সদস্যরা জানান, ধর্মীয় স্পর্শকারত বিষয় বলে বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে বহাল থাকছে।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ এ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করবে না। মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক জাতীয় পার্টিও এ বিষয়গুলো বহাল রাখার পক্ষে।
কমিটির সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে সামরিক আদেশ বলে সংবিধানে যে ধারাগুলো যুক্ত হয়েছে সেগুলো চিরতরে বাতিল করা হবে। আদালত যেগুলো পরিমার্জনা করেছে সেগুলো রক্ষা পাবে।
এছাড়া সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বাইরে যাদি কিছু থাকে সেগুলোও বাতিল হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সংবিধান সংশোধনীর এসব প্রস্তাব তৈরি করতে কমিটির আরও ৬ থেকে ৭টি বৈঠক হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গত ১০ মার্চ মহাজোটের সংদলীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান সংশোধনের জন্য বাজেট অধিবেশনের আগে এপ্রিলে সংসদের একটি সংক্ষিপ্ত অধিবেশন ডাকার নির্দেশ দেন।
ওই অধিবেশনেই সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। সে লক্ষ্যেই সংবিধান সংশোধন কমিটি অগ্রসর হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আরও জানান।
আগামী ২৪ মার্চ সংসদের চলতি অধিবেশন শেষ হবে।
আগামীকাল রোববার কমিটির নবম সভা আহ্বান করা হয়েছে। সকাল ১১টায় সংসদ ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকের পর ১৫ ও ১৬ মার্চ পরপর আরও দু’টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে গত বছর ২১ জুলাই সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৫ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি এ পর্যন্ত ৮টি বৈঠক করেছে। ৫টি বৈঠকের পর কমিটি গত বছর নভেম্বরে ৬ষ্ঠ বৈঠকে সংবিধান পুনর্মুদ্রণের সিদ্ধান্ত নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে এ কাজের দায়িত্ব দেয়।
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এ কমিটির আরেকটি বৈঠক হয়। এরপর পুনর্মুদ্রিত সংবিধান নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে।
উল্লেখ্য, উচ্চতর আদালতের রায়ের আলোকে সংবিধান পুনর্মুদ্রণের পর বিশেষ কমিটি পুনরায় কাজ শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময় ১৯৩৫ ঘন্টা, মার্চ ১২, ২০১১