চট্টগ্রাম : সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি জাহান মণির নাবিকরা ১২ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে দেশের মাটিতে পা রাখবেন।
শনিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ের এমভি জাহান মণি মুক্ত ঘোষণা করার পর বাংলানিউজকে এ কথা জানান জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান ব্রেভ রয়েল শিপিং ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের মেরিন সুপারিটেন্ডেন্ট ক্যাপ্টেন গোলাম মোস্তফা।
তিনি জানান, রোববার রাতে অথবা সোমবার সকালে মুক্ত জাহাজটি নোঙর করার জন্য মাস্কাটের সালালা পোর্ট অথবা আরব আমিরাতের কুজেরা বন্দরের উদ্দেশ্যে গ্রিসের পথে রওনা দেবে। দুটি বন্দরের যে কোনো একটিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে কমপক্ষে সাতদিন। সেখানে ভিসা এবং ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কিছু প্রয়োজনীয় কাজ সারতে সময় লাগবে আরও দু’থেকে তিনদিন। এরপর বিমানে করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
‘এ হিসেবে আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে নাবিকরা দেশে পৌঁছাবেন’- বাংলানিউজকে বলেন ক্যাপ্টেন গোলাম মোস্তফা।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাহান মণির নাবিকরা সবাই সুস্থ এবং অত আছেন বলে জানিয়েছেন ব্রেভ রয়েলের মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল করীম।
এদিকে জিম্মি নাবিকদের মুক্তির খবরে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে।
জাহান মণির ইঞ্জিন-ক্যাডেট ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার রাব্বীর মা বিলকিস জাহান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশে ফেরার পর ছেলের পায়ে ধরে বসে থাকব। সবাই মিলে তাকে বোঝাব-বাবা এ পেশায় আর যেও না। ’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ছেলে ফিরলে আমি তাকে নিয়ে মাজারে মাজারে ঘুরব। মানত করেছিলাম, ছেলে ফিরলে আমি যত মাজার চিনি, সবকটিতে গরু, খাসি দেব। ’
এর আগে মুক্তিপণের বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হওয়ার পর শুক্রবার সকালে জাহাজটির মালিকপক্ষ তিনদিনের মধ্যে জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত পাঁচ ডিসেম্বর জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। জাহাজটি সর্বশেষ যে স্থানে নোঙর করা ছিল গারাকাদ নামে সে অঞ্চলটি ‘সোমালীয় জলদস্যুদের মুক্তাঞ্চল’ হিসেবে পরিচিত।
জাহাজটিতে ২৫ নাবিক ও এক নাবিকের স্ত্রীকে জিম্মি করে রেখেছিল জলদস্যুরা। নোঙর করার পর ১২ ডিসেম্বর শুরু হয় জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে জলদস্যুদের যোগাযোগ।
বাংলাদেশ সময় : ১৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২., ২০১১