ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে অন্য কোনও রাষ্ট্রের নাক গলানোর অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
কনিবার রাজধানীর ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার: অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কিমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের গ্রন্থ প্রকাশ উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করে সংগঠনটি।
আইনমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে বিভিন্ন ফোরাম থেকে বিদেশি হস্তক্ষেপের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এ বিচার বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে অন্য কোনও রাষ্ট্রের মন্তব্য বা নাক গলানোর অধিকার নেই।
বিচারপ্রক্রিয়ার গতি নিয়ে বক্তাদের তোলা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেনম, আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এবং সহসাই তা শুরু হবে।
মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক যুুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট-১৯৭৩ একটি উৎকৃষ্ট আইন--এটি স্বীকার করতেই হবে। এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অবকাশ নেই। তারপরও এ আইনে যেসব দুর্বলতা ছিলো তা আমরা সংশোধন করেছি।
এ সময় তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্তর্জাতিক মান ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে বলেও ফের অঙ্গীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ প্রকাশ্য আদালতে বিচার হবে। যত সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক আসতে চায় তাদের সুযোগ আমরা দেব। প্রয়োজনে বিচারিক কার্যক্রম বড় পর্দায় দেখানো হবে যাতে বিশ্বব্যাপী মানুষ এ বিচার অবলোকন করতে পারেন। ’
বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্ত কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি সহসাই অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে।
বিচার শুরু হলে আরও আইনজীবী নিয়োগ করা হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
এর আগে শাহরিয়ার কবির তার বক্তব্যে বিদেশি শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই পশ্চিমা শক্তি বিচারের এখতিয়ার, ১৯৭৩ সালের আইন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। তারা মূলত এ বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং একে বানচাল করতেই এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে।
তিনি বলেন, আমি আমার বইয়ে পাঁচ হাজার বছরের যুদ্ধাপরাধের ইতিহাস এনেছি। যাতে দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি শুরু হয়েছিল।
‘তাই পশ্চিমাদের কাছে কেন আমাদের বিচারের বিষয়টি শিখতে হবে? বরং তাদের আমাদের কাছ থেকে শিখতে হবে কীভাবে বিচার করতে হবে। ’, বলেন শাহরিয়ার।
কমিটির সভাপতি বিচারপতি গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি সৈয়দ আমীরুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১১