ঢাকা: ‘গ্রামীণব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ড. ইউনূসকে চাই’-- এ ধরনের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিতে গ্রাহকদের স্বাক্ষর গ্রহণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের সব শাখা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। গ্রাহকদের স্বাক্ষর সম্বলিত এই স্মারকলিপি ইউনূসের পদ ফিরে পাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে।
মিরপুরের প্রধান কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে স্মারকলিপির অনুলিপি ই-মেইলে দেশের জোনাল ও শাখাসহ সব শাখায় পৌঁছে গেছে। বৃহস্পতিবারই অনেক শাখায় গ্রাহকদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া খবরে এই তথ্য জানা গেছে।
গ্রামীণব্যাংকের সূত্র জানায়, ই-মেইলে এ স্মারকলিপির একটি অনুলিপি সব শাখার ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণব্যাংকের শাখাগুলো থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, স্বাক্ষরের জন্য অনেক শাখায় গ্রাহকদের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে, ‘সব ঠিক হয়ে গেলে আগামীতে আরও ঋণ পাওয়া যাবে। স্বাক্ষর না করলে আর কখনোই ঋণ পাওয়া যাবে না। ’
সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণব্যাংকের শাখা আছে ১ হাজার ৫৮৩টি। এদের অধীনে কেন্দ্র আছে প্রায় ৮০ হাজার।
শাখা-ম্যানেজাররা প্রধানত এসব কেন্দ্রপ্রধানের সঙ্গেই যোগাযোগ করে স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করছেন।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রপ্রধানরা গ্রামীণব্যাংকের কর্মী নন, বরং তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার সদস্য। একেকটি শাখায় অন্তত ৫০ জন সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রপ্রধান হয়ে থাকেন।
এদিকে গ্রামীণব্যাংকের ওই স্মারকলিপির ব্যাপারে মন্তব্য জানতে মিরপুরে প্রধান কার্যালয়ে দুপুরের পর থেকে টেলিফোনে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘মানববন্ধন-স্মারকলিপি এটাতো যেকারও নাগরিক ও মানবিক অধিকার। গ্রাহকরা চাইলে তা তো করতেই পারেন। ’
তবে এই স্মারকলিপি মিরপুরের প্রধান কার্যালয় থেকে সারাদেশে পাঠানো সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ওই পদস্থ কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
প্রসঙ্গত, এমডি পদে থাকার বয়স পেরিয়ে গেলেও আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে গ্রামীণব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ আঁকড়ে থাকায় গত ২ মার্চ ড. ইউনূসকে অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর আদালতে রিট করলেও তা খারিজ হয়ে যায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশের বৈধতা বহাল থাকে।
আদালতের ওই ও রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে লিভ টু আপিল করেছেন ড. ইউনূস। আগামী ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এর শুনানি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১