ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের আগুন

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে ৫ একর বন এখনও পুড়ছে, নিয়ন্ত্রণে আসছে না

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১১
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে ৫ একর বন এখনও পুড়ছে, নিয়ন্ত্রণে আসছে না

বাগেরহাট: পুর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের পঁচা কোড়ালিয়া এলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে লাগা আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বনরক্ষী-দমকল ও সাধারণ জেলে বাওয়ালীদের সম্মিলিত চেষ্টাও আগুনকে দমাতে পারছে না।



প্রায় ৫ একর এলাকার বন জুড়ে এখন পর্যন্ত আগুন জ্বলছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে। তবে বনে উপস্থিত জেলে-মৌয়াল ও বনকর্মীদের অনেকেই জানান, কমপক্ষে ৮একর জায়গা নিয়ে জ্বলছে এ আগুন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মিহির কুমার দো বাংলানিউজকে জানান, শরণখোলা সংলগ্ন চাঁদপাই রেঞ্জের পঁচা কোড়ালিয়া এলাকায় ওইদিন বিকাল ৪টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আগুন যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে লক্ষ্যে বনকর্মীরা আগুন কবলিত এলাকার চতুর্দিকে ফায়ার লাইন (পড়ে থাকা শুকনো পাতা সরিয়ে ফাঁকা বৃত্ত তৈরি করা) তৈরি করে।

ডিএফও জানান, কিন্তু সারা রাতের চেষ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

পরে বুধবার সকালে খুলনা ও মোড়েলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ঘটনান্থলের পৌঁছে কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন। তারা এখনও ব্যস্ত রয়েছেন, তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

বুধবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে স্থানে আগুন লেগেছে সেখানে পানির তেমন উৎস না থাকায় ৫হাজার মিটার লম্বা পাইপের সংযোগ দিয়ে দেড় কিলোমিটার দূরের খাল থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ নিয়ে এ এলাকায় দ্বিতীয়বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। গত ১ মার্চ রাতে পঁচা কোড়ালিয়ার পার্শবর্তী নাংলী এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে দুই একর বনের গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বনরী, ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী বিরামহীন চেষ্টায় ২দিন পর ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এবারের অগ্নিকাণ্ডে সুন্দরীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পুড়েছে বলে আশপাশের এলাকাবাসী জানান।
 
ডিএফও মিহির কুমার দো জানান, মৌয়াল অথবা বনজীবীদের সিগারেটের আগুনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে বনে কর্মরত জেলে হেলাল ও হাবিবুর রহমান এ প্রতিনিধিকে জানান, সুন্দরবেন সংলগ্ন শরণখোলা এলাকার চোরা মাছ শিকারী একটি চক্রের দেওয়া আগুনে এ ঘটনা ঘটেছে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে কারেন্ট জাল পেতে মাগুর ও কৈ মাছ ধরার জন্য তারা শুষ্ক মৌসুমের এ সময়টায় আগুন দিয়ে বন পরিষ্কার করে থাকে বলে তারা জানান।

তবে বককর্মী ও জেলেদের কেই কেউ মৌয়ালদের মশালের আগুন থেকেও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে জানান।

সুন্দরবনের চাঁদপাই ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল খালেক হাওলাদার বাংলানিউজকে জানান, সিডরের পর অনেক গাছপালা ভেঙ্গে বনভূমির অনেক স্থানে এক থেকে দেড়ফুট পর্যন্ত ঢেকে আছে। মৃত গাছের এসব ডালপালা শুকিয়ে বর্তমানে সহজে দাহ্য অবস্থায় উপনীত হয়েছে। এ কারণে এখানে লাগা আগুন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
 
এদিকে ক্ষতিপূরণ নিরূপন ও আগুনের কারণ জানতে সহকারী বন সংরক্ষক খলিলুর রহমানকে প্রধান করে ৩সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান ডিএফও মিহির কুমার। তিনি জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটিেিক প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।