ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এমপি আফজালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৪
এমপি আফজালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা মো. আফজাল হোসেন

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত ঢাকা ট্রেড সেন্টারের কাপড় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন রিপনের দায়ের করা একটি মামলায় গত ২৪ জুলাই ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিম আদালতের নির্বাহী হাকিম মাহবুব জামিল এমপি আফজালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করেন।



সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন নিজের তিন মেয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত হকার দেখিয়ে ট্রেড সেন্টারের তিনটি দোকান বরাদ্দ দেন। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী কামাল হোসেন রিপন প্রতিবাদ করলে এমপি আফজাল তাকে ভয়ভীতি দেখান। এ নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি করার পর তিনি আদালতে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।  
 
মামলার বাদী কামাল হোসেন রিপন বাংলানিউজকে জানান, এমপি আফজাল তার তিন মেয়ে জুনায়েদ আক্তার তুষার (১৬), হৃদি (১২) ও বৃষ্টিকে (৮) ক্ষতিগ্রস্ত হকার দেখিয়ে ২০১০ সালের ৩০ মার্চ রাজধানীর গুলিস্তানের ঢাকা ট্রেড সেন্টারে তিনটি দোকান বরাদ্দ নেন। দোকান নং যথাক্রমে ৩৯/১, ৩৫/২ ও ৩৫/১।

রিপনের অভিযোগ, বরাদ্দ নেওয়ার কিছুদিন পরই এমপি আফজাল প্রতিটি দোকান ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এভাবে কমিটি দোকান বরাদ্দের মাধ্যমে তিনি শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

মামলার বাদী কামাল হোসেন রিপন বলেন, এ মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদটি সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন ছয় বছর ধরে আঁকড়ে রয়েছেন। টানা ছয় বছরে আফজাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিটি সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে মার্কেটে ৫২৫টি দোকান নির্মাণ করেন। বেজমেন্ট, গাড়ি পার্কিং এবং এক্সেলেটরের সিঁড়ির জায়গাসহ যেখানে ফাঁকা পেয়েছেন সেখানেই দোকান নির্মাণ করেছেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে বিভিন্ন মোবাইল ও ফোন নাম্বার থেকে হত্যার হুমকি দেন। ‍অন্য ব্যবসায়ীদেরও আফজাল হোসেনের সহযোগীরা বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দেন।

এ বিষয়ে বিভিন্ন থানায় রিপন ছয়টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। উপর্যুপরি হুমকির কারণে তিনি গত ৯ জানুয়ারি ঢাকার নির্বাহী হাকিমের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় সংসদ সদস্য আফজালসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। গত ২৪ জুলাই মামলার নির্ধারিত দিনে আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
 
রিপন বলেন, মার্কেটে একটি দোকান থাকার সুবাদে ২০০৯ সালে নির্বাচিত কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের এমপি আফজাল হোসেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদটি দখল করেন। দুই বছর পরপর দোকান মালিক সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত ছয় বছরে আর কোন নির্বাচন হয়নি।

ব্যবসায়ীরা সমিতির নির্বাচন দাবি করলে ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্যের সহযোগীরা আমাকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে মারধর করে ও দোকানে তালা লাগিয়ে দেন।

বিষয়টি তিনি রাজউকের চেয়ারম্যানকে জানানোর পর সিটি করপোরেশনের একজন নির্বাহী হাকিম এই চক্রকে উচ্ছেদ করতে গেলে তাদেরও ফিরিয়ে দেন অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে তিনি একটি রিট পিটিশন করেছিলেন, যা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। পুলিশ আদালতের পরোয়ানা তামিল এবং প্রতিবেদন দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন রিপন।

ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিম আদালতের বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম.এ. ইউসুফ বাংলানিউজকে জানান, নোটিশ দেওয়ার পরেও এমপি আফজালসহ ১৫ জন আদালতে হাজির না হওয়াতে নির্বাহী হাকিম মাহবুব জামিল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।