ঢাকা: নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে গ্রামীণব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অব্যাহতির আদেশ সম্পূর্ণ বেআইনি বলে উল্লেখ করেছেন ড. কামাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার আইনজীবী সমিতির হল রুমে এ বিষয়ে শুনানি শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় ইউনূসকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদের (বোর্ডের) বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ইউনূস যতোদিন ইচ্ছা গ্রামীণব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন। এরপর ২০০১ সালে রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে তাকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সরকারের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি সরকারও জানে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকও জানে।
২০০৯ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অবসর নিতে চাইলেও বোর্ডের সদস্যদের অনুরোধে তিনি এ পদে থেকে যান।
গতকালই (বুধবার) অর্থমন্ত্রী বললেন, ড. ইউনুসের পদে থাকার বিষয়টি আইনগত। কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই গতকাল তাকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ড. কামাল।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, ‘গ্রামীণব্যাংক নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি এর নিজস্ব আমানতকারীদের আমানতের টাকায় চলে। বিদেশ থেকে কোনো অর্থ আনা হয় না।
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রায় ৮০ লাখেরও বেশি লোক এর সঙ্গে জড়িত। এটি একটি বিরাট প্রতিষ্ঠান। এখানে আস্থায় চিড় ধরলে প্রতিষ্ঠান নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। আমি দায়িত্বে থাকি বা না থাকি সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রতিষ্ঠানটি যাতে ভালোভাবে চলতে পারে সেজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই। `
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অনেকবার অবসর নিতে চেয়েছি। কিন্তু বোর্ডই আমাকে যেতে দেয় নি। এখন আমি চাই সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে চাই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত বিদ্বেষপূর্ণ কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, `যাওয়াটা সুন্দর হচ্ছে না। `
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গ্রামীণব্যাংকের চাকরির বিধি অনুযায়ী অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬০ বছর। কিন্তু ড. ইউনূসের বর্তমান বয়স ৭০ এর বেশি। সুতরাং এখন ওই পদে তার থাকাটা অবৈধ। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে অব্যাহতি দিয়েছে। `
তিনি বলেন, `শুনানিতে আমি বলেছি, একজন ব্যক্তির ৬০ বছর বয়সে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু গ্রামীণব্যাংকের বোর্ড সদস্যরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে তাকে যতোদিন সম্ভব ওই পদে থাকার অনুমোদন দিয়েছেন। `
এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তাকে এ বিষয়টি আগেই জানানো হয়েছে। তারপরও উনি কেন থাকলেন। বাংলাদেশ ব্যাংককে কেন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। `
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১১