ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের তুবরুক সীমান্তে সরিয়ে নেওয়া হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১১
লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের তুবরুক সীমান্তে সরিয়ে নেওয়া হবে

ঢাকা: ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী সাব-সাহারা দেশ লিবিয়ার বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া বাংলাদেশিসহ অন্য দেশের নাগরিকদের লিবিয়ার পূর্ব সীমান্তে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শিগগির শুরু হচ্ছে। তাদের মিশরীয় সীমান্তবর্তী তুবরুক প্রদেশের সীমান্তে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।



লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবিএম নুরুজ্জামান বুধবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে টেলিফোনে এ তথ্য জানান।

কর্মী নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন দেশের সমর্থন ও সহযোগিতায় এ উদ্যোগ নিয়েছে বলেও তিনি জানান।

লিবিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠান দাইয়ু, ডং এহ, হিউন্দাইসহ বিভিন্ন ভিনদেশি কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠান থেকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছে। এতে তারা বাংলাদেশি কর্মীদের সরিয়ে নেওয়াসহ নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিচ্ছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবু জাফর বাংলানিউজকে জানান।

পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসও এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশিদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। লিবিয়ায় কার্যক্রম চালানো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ’

ঢাকায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগাযোগের বিষয়টির সূত্র ধরে লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্্রদূত এবিএম নুরুজ্জামান বলেন, ‘কয়েকটি কোম্পানির ত্রিপলিস্থ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমিও কথা বলেছি। ’

তিনি বলেন, ‘দাইয়ু ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়েছে, সুবিধাজনক সময়ে তারা বেনগাজি থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবেন। ’

রাষ্ট্রদূত জানান, লিবিয়ায় কাজ করা রেডক্রসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে বিষয়গুলো নিয়ে রেডক্রসও চিন্তিত। তারা বাংলাদেশিদের ব্যাপারে বিশেষভাবে নজর রাখছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।

এবিএম নুরুজ্জামান বলেন, ‘বেনগাজি শহরে একটি নিরাপদ এলাকায় বিদেশিদের অবস্থানের জন্য স্থান খোলা রয়েছে। সেখানেও অনেকেই যাচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমি লিবিয়ায় বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমার অনুরোধ ও নির্দেশনা তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। ’

বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ত্রিপলিতে খোলা কন্ট্রোল রুমে তিনি নিজেও দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশিদের ওপর লিবীয়দের বিশেষ কোনো ক্ষোভ নেই। ’  

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি আক্রমের শিকার হয়ে কোনো বাংলাদেশি এখন পর্যন্ত আহত হননি। ভিড়ের মধ্যে অন্যদের সঙ্গে দু’একজন সামান্য আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। ’

দেশটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ত্রিপলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। ’   
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অনুবিভাগের মহাপরিচালক সুলতানা লায়লা হোসেন বুধবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘লিবিয়ায় চারশ’র মতো বাংলাদেশি আটকে পড়েছেন। তবে ওই পরিস্থিতিতে যতটুকু ভালো থাকা যায়, তারা তাই রয়েছেন। ’  

দেশটির প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির বিরোধীতা করে লিবিয়ার নাগরিকদের একটি অংশের আন্দোলনের কারণে বেনগাজীসহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ আটকে পড়েছে।

আটকে পড়া বিদেশিরা মূলত ওই এলাকাগুলোর বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করতো বলে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।