ঢাকা: মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবিতে রোববার পাহাড়ি ছাত্রদের কাস বর্জন কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হয়েছে। তবে কর্মসূচি পালনকালে ৮ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে সেনা সদস্যরা।
উল্লেখ্য, মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করাসহ শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে এ কর্মসূচির ডাক দেয় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।
পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলায় ব্যাপকভাবে কর্মসূচিটি পালিত হয়েছে। এসব জেলার বেশিরভাগ স্কুল-কলেজেই তেমন কোনও ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত হয়নি।
তবে এদিন সকালে কর্মসূচি পালন করতে কলেজে যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হন রাঙ্গামাটির নান্যাচর কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শুদ্ধ চাকমা, অর্থ সম্পাদক মিটন চাকমা ও নান্যাচর থানা শাখার সদস্য নরেন চাকমা।
এদের গ্রেপ্তার করে নান্যাচর জোনের সেনারা।
এছাড়া সুবলং থেকে নোয়াদাম জুনিয়র হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সুমন চাকমা (১৭), বরুণাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র উজ্জ্বল চাকমা (১৪) ও কাট্টলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র শুভ চাকমা (১৭)।
গ্রেপ্তার অন্য ছাত্রের নাম জানা যায়নি।
সুবলং ক্যাম্পের কমান্ডার লে. মাসুদ রানার নেতৃত্বে তাদেরকে আটক করা হয়।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিনা কারণে এসব ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ’
তিনি এ গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে ছাত্রদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
এ সময় তিনি কর্মসূচি সফলভাবে পালিত হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এরই অংশ হিসাবে কাল একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া থেকে পাহাড়ি ছাত্রদের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন উপমন্ত্রী এবং ১৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি তুলে ধরে পাহাড়ি ছাত্ররা।
দাবিগুলো হচ্ছে- পার্বত্য চট্টগ্রামে সব জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, স্কুল- কলেজের পাঠ্যপুস্তকে জাতিসত্তার প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য বাদ দিতে হবে, পাহাড়ি জাতিসত্তার বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনী ও সঠিক সংগ্রামী রাজনৈতিক ইতিহাস স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, বাংলাদেশের সব জাতিসত্তার সংপ্তি সঠিক তথ্য সম্বলিত পরিচিতিমূলক রচনা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, পার্বত্য কোটা বাতিল করে পাহাড়িদের বিশেষ কোটা চালু করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১১