ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সাংঘর্ষিক: ড. মিজান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১১
সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সাংঘর্ষিক: ড. মিজান

ঢাকা: সংবিধানে একই সঙ্গে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম--এ দুয়ের অবস্থান সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়াম্যান ড. মিজানুর রহমান।

একই সঙ্গে তিনি সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’র পরিবর্তে ‘পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে’  উল্লেখ করলে ভালো হয় বলে মত দিয়েছেন।



শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাপ্তাহিক ‘বর্তমান সংলাপ’ এর ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘সংবিধান অবমাননা’ র্শীষক মুক্ত আলোচনার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি থেকে বলা হয়েছে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্ম নিরপেক্ষতা দুটিই বহাল থাকবে। কিন্তু বিষয় দুটি এমনভাবে সাংঘর্ষিক যে একটি থাকলে আরেকটি থাকতেই পারে না।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ কমিটি বিষয়টি অনুধাবন করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করছি। ’  

মিজানুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। ধর্ম প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাপার। রাষ্ট্র যদি মনে করে প্রত্যেকের ধর্ম আছে তাহলে সংবিধানে আরবিতে ‘বিসমিল্লাহ’ না লিখে ‘পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে’ লিখলে ভালো হয়। সেক্ষেত্রে অন্য ধর্মকেও অবমাননা করা হবে না।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত বিশেষ কমিটি তার ৮ম বৈঠকে সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি কমিটি জানায় সংবিধানের মূল স্তম্ভ ধর্মনিরপেক্ষতাও অক্ষুন্ন রাখা হবে।  
   
আলোচনা সভায় ডেইল সানের সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম উপহার দিয়েছিলেন যথাক্রমে দুই স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর বর্তমান সরকার তাদের সেই উপহারকে সাদরে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মানুষ এতো মুর্খ নয় যে সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব এমন কথা বিশ্বাস করবে। ’

তবে ’৭২ এর সংবিধানেও অনেক ভুল ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হুবহু ’৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার দাবি অযৌক্তিক। ’

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম রাখা হলে ধর্মান্ধগোষ্ঠীরাই এর সুযোগ নেবে। ’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান অভিযোগ করেন, স্বৈরাচারী সরকারগুলো তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্যই সংবিধানে বিসমিল্লাহ সংযুক্ত করে কিংবা রাষ্ট্রধর্মকে ইসলাম করে। আর বর্তমান সরকার সেই সিদ্ধান্তকেই মেনে নিচ্ছে। ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহম্মদ মোহাব্বত খান বলেন, ‘যে দেশের রাজনৈতিক নেতারা তাদের অবস্থান ঠিক রাখতে পারেন না সেখানে সাংঘর্ষিক বিষয়তো থাকবেই। ’

মুক্ত আলোচানায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বর্তমান সংলাপের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. এমদাদুল হক কাজল।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি, ২০১১/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।