ঢাকা: অন্যায়, অনাচারের শৃংখল আর বর্বরতার দাসত্ব থেকে মুক্তির বাণী নিয়ে শান্তি, ন্যায় আর সুবিচারের মহান দূত হিসেবে ১৪ শ’ বছরেরও বেশি সময় আগে এ ধূলির ধরায় আবির্র্র্ভূত হয়েছিলেন মানবতার মুক্তির দিশারি মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ)।
সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও বিশেষ মর্যাদা আর ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায় পালন করছে এ মহামানবের জন্মদিন বা ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ)।
বর্তমান বিশ্বের অস্থিরতা আর অশান্তির পেছনে এই মহামানবের প্রচারিত মানবতার মুক্তির সনদ কোরান ও সুন্নাহর আদর্শ থেকে বিচ্যুতিই মূল কারণ বলে এসব কর্মসূচির আলোচনায় উঠে এসেছে।
যে আদর্শের ছায়াতলে আরবের আইয়ামে জাহেলিয়াত বা বর্বর যুগের মানুষরা আত্মশুদ্ধি লাভ করে সে আদর্শের মর্মবাণী আবার সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান আজ ধর্মীয় সাধকসহ মুক্তিকামী মানবতার।
এ উপলক্ষ্যে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাউজভাণ্ডারির উদ্যোগে বুধবার রাজধানীতে বর্ণাঢ্য জশনে জুলুশ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
মহানবীর ৩০তম বংশধর দরবার-ই-গাউসুল আজম মাইজ ভাণ্ডরির সভাপতি মাওলানা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ র্যালিতে অংশ নেয়।
র্যালির সামনে ‘ইয়ানবী সালামু আলাইকা’ লেখা বর্ণিল ব্যানার শোভা পায়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী মাইজভাণ্ডারির হাজারো ভক্তের হাতে শোভা পায় আরবীতে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লেখা পতাকা ও নানা বর্ণের ফেস্টুন।
কয়েকটি ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি নিয়েও মুসুল্লিরা র্যালিতে অংশ নেন। বাদ্যের তালে তালে তারা আল্লাহ ও রাসুলের গুণকীর্তন করে স্লোগান দিতে থাকে।
দুপুর ১২টার দিকে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে এ র্যালি শুরু হয়।
র্যালিটি মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, সুপ্রীম কোর্ট এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে আবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এসে শেষ হয়। র্যালি চলার সময় পুরো এলাকায় ‘আল্লাহ-মোহাম্মদ’ ধ্বনিতে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর আগে একই স্থানে এ উপলক্ষ্যে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে পুরুষের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যাক নারীও অংশ নেন।
মিলাদ মাহফিল শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিপূর্ব মিলাদ মাহফিলে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অংশ নেন। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাসুল (সঃ) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তার দেখানো পথেই প্রকৃত শান্তি নিহিত রয়েছে। ইসলামকে শুধু ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, এর আদর্শ দেশ ও সমাজের কল্যাণে লাগাতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে অধিক জ্ঞান রাখেন তারা ধর্ম সম্পর্কে নিশ্চিত হন। আর যারা কম জ্ঞান রাখেন, কেবল তারাই এ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করেন। ’
মহানবীর মিরাজ সম্পর্কে কিছু মানুষ অযথা ভুল ধারণা পোষণ করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বনবী (সঃ) এর মিরাজ গমন এখন বিজ্ঞান কর্তৃক প্রমাণিত। কারণ কারও গতিবেগ যদি আলোর গতিবেগের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে সেখানে সময় কোনো সমস্যা নয়। ’
এদিকে সকাল থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গনে মিলাদ মাহফিলের পাশাপাশি মইনীয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নগরীতে পৃথক পৃথক র্যালি, গাড়ি মিছিল, শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটি উপলক্ষে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক জাতীয় ও কালেমা লেখা পতাকায় সাজানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১২৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১১