ঢাকা: আড়িয়ল বিলে বিমান বন্দর নির্মাণ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্যে সরকারের ভেতরে ও বাইরে একটি চক্রকে দায়ী করেছেন ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা।
তিনি বলেছেন, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও ভূমি অধিগ্রহণের জন্যে কোনো প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি অথচ এই ইস্যুতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার প্রাণ হারাতে হলো।
রোববার দুপুরে সাভারের ডেইরি ফার্মে বিসিএস প্রশাসন, পুলিশ ও জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রশিণ কোর্সের উদ্ধোধন করতে গিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আড়িয়ল বিলের জমি অ্যাকোয়ার করা নিয়ে কোনো ফাইলই মন্ত্রণালয়ে আসেনি তার আগেই শুরু হয়ে গেলো এতোকিছু। যার মধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। ’
এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আলাপ হয়েছিলো কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এমন কি মন্ত্রিসভায় প্রকাশ্যে এ নিয়ে আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনো কথা হয়নি। ’
মন্ত্রী জানান, ভূমি ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানি দূর করতে সরকার আন্তরিক ভাবে কাজ করছে।
ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম শুরু হলে এ েেত্র দুর্নীতি ও হয়রানী অনেক কমে যাবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, তিনটি পর্যায়ে দেশের পার্বত্য অঞ্চল বাদে দেশের ভূমি জরিপ ডিজিটাইজ করা হবে।
২০১১ সালের জুনের মধ্যে ঢাকা মহানগরী, ২০১২ সালের জুনের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা সদর ও তৃতীয় পর্যায়ে ২০১৩ মধ্যে সারা দেশের ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে আসবে।
এতে ঘরে বসেই মানুষ দেখতে পাবে তার জমির পরিমান, রেকর্ডের অবস্থা কিংবা প্রতিবেশীর জমির খতিয়ান সবকিছুই।
ভূমি জরিপ অধিদপ্তরে দুর্নীতি ও হয়রানীর বিষয়টি স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘অবস্থা সেখানে এমন যে লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড় হবার দশা। ’
অধিদপ্তরে জনবল সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, তদারকি পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৪ জনের স্থলে লোক রয়েছে মাত্র ২৪ জন।
তদারকির অভাবে হয়রানী ও দুর্নীতি বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে সরকার।
৬০ বিঘার উর্ধ্বে কৃষি জমির মালিকদের জমি প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি হিসেবে খাস খতিয়ান ভূক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ভূমি এলাকার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নজরে আনা হলে সেই জমি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে খাস জমি হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশনা রয়েছে।
মন্ত্রী জানান, অনেকেই সরকারি জমি লিজ নিয়ে কাগজপত্র তৈরি করে মালিক বনে যান।
শিল্পায়নের নামে জমি বরাদ্দ নেওয়ার পরও জমি পতিত রাখা হচ্ছে কিংবা সেখানে বাংলোবাড়ি তৈরি করে পিকনিক স্পট করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমি সম্প্রতি ময়মনসিংহের ভালুকায় গিয়ে এ চিত্র দেখেছি। আমি জেলা প্রশাসনকে বলে দিয়েছি তাদের তালিকা তৈরি করতে।
এর আগে প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভ’মিমন্ত্রী বলেন, দেশে দিন দিন ফসলি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে, আমরা আবাদী জমি রায় ভূমি সংরণ আইন করতে যাচ্ছি।
ভূমি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১১