ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘গাজীপুরে ক্যাব ক্যাম্পুরি উদ্বোধন’

স্কাউটিং মানবদরদী হতে শেখায়: প্রধানমন্ত্রী

আবুল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১১
স্কাউটিং মানবদরদী হতে শেখায়: প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্কাউট আন্দোলন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত স্বেচ্ছাসেবী ও শিক্ষামূলক যুব আন্দোলন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সৎ চরিত্রবান, আত্মপ্রত্যয়ী নাগরিক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্কাউট আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।

স্কাউটিং একজন তরুণকে নিজেকে সবধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবদরদী হতে শেখায়।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় ক্যাব ক্যাম্পুরীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কাউটিং একজন তরুনকে সবধরণের পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানব দরদী হতে শেখায়। যত বেশি সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী স্কাউটিং আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবে আমরা তত বেশি সুনাগরিক পাবো। কোমলমতি শিশুদের মধ্যে নেতৃত্বের গুনাবলীর সমাবেশ ঘটানো এবং যে কোনো পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা অর্জনে কাবিং অত্যন্ত কার্যকর।

বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. মোমতাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ক্যাব ক্যাম্পুরির সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নেসা খানম ও বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার ও বিদ্যুৎসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. মো. আফসারুল আমীন, গাজীপুর-৩ সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলী, গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, টঙ্গী পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আজমত উল্যাহ খান, শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন সবুজ, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদারসহ স্কাউট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে তাকে ক্যাম্পুরি ব্যাজ, স্কার্ফ, গ্র্যান্ড ইয়েল ও শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়। পরে তিনি ক্যাম্পুরি পতাকা হস্তান্তর, কবুতর, বেলুন, স্মারক খাম ও ডাক টিকেট অবমুক্ত এবং কাব স্কাউটদের ডিসপ্লে ও তাবু এলাকা পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ক্যাম্পুরীতে এসে ছোট সোনামনিরা সেবার মানসিকতা, মিলেমিশে থাকা এবং পারস্পিারিক শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা লাভ করে। স্কাউটিং একজন তরুনকে সব ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি মানব দরদী হতে শেখায়।

তিনি কাবদের উদ্যেশে বলেন, ‘তোমরা রবার্ট ব্যাডেলের উত্তরসূরি। মানব সেবার জন্যই ব্যাডেল পাওয়েল ১৯০৭ সালে স্কাউট আন্দোলন শুরু করেন। সেবা আর ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে তোমরা বড় হবে। বড়দের সম্মান করবে। অন্যদের উপকারে নিজেদের নিবেদিত করবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে চিফ স্কাউট হিসেবে দীক্ষা গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে স্কাউটিং সম্প্রসারনের গুরুত্বআরোপ করে তরে তিনি স্কাউটিংকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে আমরা স্কাউটিং সম্প্রসারন ও মানোন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

তিনি জানান, মৌচাক জাতীয় প্রশিক্ষন কেন্দেকে আর্ন্তজাতিক মানের অ্যাডভেঞ্চার ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করি। কাব স্কাউটদের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষন ও মানোন্নয়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষ মন্ত্রণালয় কাবিং সম্প্রসারন প্রকল্প এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় হিউম্যান রির্সোস ডেভেলপমেন্ট ‘থ্রূ স্কাউটিং’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এসব প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সব সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাব স্কাউট এবং স্কাউট দল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্দ্যেশে মৌচাকে একটি সাইবার ক্যাফে স্থাপনের জন্যে ইতিমধ্যে ১০টি কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে।
স্কাউট আন্দোলনকে জোরদার করার জন্যে সর্বাত্বক সহযোগীতা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে একটি সুশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল জনগোষ্ঠি দরকার। আমরা শিক্ষা-দীক্ষায়, আচার-আচরনে , দেশপ্রেম সোনার মানুষ গড়ে তুলতে চাই। যারা বড় হয়ে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাঠ্য পুস্তকে এখন সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হচ্ছে। পাঠ্য পুস্তকের বাইরেও তোমরা বাঙ্গালীর হাজার বছরের ইতিহাস, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসা ও প্রশিক্ষনের বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। তিনি সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠনকে অসহায় শিশুদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দুর্গত মানুষের সেবায় স্কাউট সদস্যদের ভ’মিকার প্রশসংসা করেন।
আমরা প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষা দেওয়াসহ প্রতিটি ইউনিয়নে কম্পিউটার ভিত্তিক তথ্য কেন্দ্র চালু করেছি। সকলে মিলে কাজ করলেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারব।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা স্কাউট কার্যক্রম আরো সম্প্রসারনের উদ্যেগ গ্রহণ করুন। গ্রামেগঞ্জে এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।