ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জার্মান জার্নাল

বার্লিনের পথে দোহা আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে কিছুসময়

<img src="http://www.banglanews24.com/images/advertisement/maria-sm.jpg" width="63" height="68" />মারিয়া সালাম<br>বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১১
বার্লিনের পথে দোহা আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে কিছুসময়

দোহা থেকে: প্যাসেঞ্জার অ্যানাউন্সমেন্ট কানে আসতেই হঠাৎ করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। চোখ খুলতেই সামনের স্ক্রিনে ভেসে উঠল কাতারগামী ফ্লাইটের ম্যাপ।

দেখলাম বিমানটি তখন কাতারের বুক ছুঁই ছুঁই। জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই চোখ এবং মন দুটোই জুড়িয়ে গেল।

মনে হল, ঘুমের মাঝেই কোনো এক স্বপ্নের জগতে চলে এসেছি। এত আলো, এত রং, এত চোখ ধাঁধাঁনো উজ্জ্বলতা, আমি এর আগে কোনোদিনই দেখিনি। ঠিক যেন ছেলেবেলায় শোনা রূপকথার কোনো এক নগরী ।    

দোহায় নামলাম স্থানীয় সময় রাত ১১ টায়। বিমান থেকে নেমেই আমার পরের ফ্লাইটের খোঁজ-খবর নিতে বেশ তাড়াহুড়ো করেই দোহা আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের মূল লাউঞ্জে ঢুকলাম। এখানে তিন ঘন্টার বিরতির পর আমাকে বার্লিনের উদ্দেশ্যে  আরেকটি ফ্লাইট ধরতে হবে। এত বড় বিমানবন্দর, তারপর আমি এই প্রথম এখানে এলাম, কিছুই চিনি না দেখেই এই তাড়াহুড়ো। আর হাতে সময়ও তেমন একটা নেই।

ভেতরে ঢুকেই বেশ অবাক হয়ে গেলাম। বিশাল বড়  জুড়ে ছড়িয়ে আছে এই অত্যাধুনিক বিমানবন্দরটি। ২০টিরও বেশি গেটে প্রায় সব সময়ই চেক-ইন চলছে। বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে কাতার এয়ারওয়েজের প্রতিটি কর্মী। হাজার হাজার যাত্রী, তবুও কারো কোনো বিরক্তি নেই। কোনো বিশৃঙ্খলাও চোখে পড়ল না।

আমার টার্মিনাল খুঁজে পেতে ১০ মিনিটও লাগলো না । দেখলাম প্রত্যেকটি টার্মিনালের সামনেই যাত্রীদের বসবার জন্য পর্যাপ্ত চেয়ার রয়েছে।  

বহির্গমন কাউন্টারগুলো বেশ উন্নতমানের আধুনিক ডিজাইনের, একদম ঝকঝকে আর সত্যিই সুন্দর। চোখে ভেসে উঠলো আমাদের বর্হিগমন কাউন্টারের চেহারা। মন্তব্য নিষ্প্রোয়জন!

আমার হাতে সময় একদমই কম ছিল । অল্প সময়ে যা দেখলাম, তা বেশ আর্শ্চয হবার মত। কি নেই এখানে, খাবারের দোকান, বুক স্টল, খেলনার দোকান, এমনকি অবকাশ যাপনকেন্দ্র পর্যন্ত রয়েছে এখানে। টেলিফোন বুথ এবং ই-মেইল সার্ভিসও যুক্ত হয়েছে।

তবে যেটা একদমই এসবের সাথে যায় না, তা হল টেলিফোন বুথগুলিতে কয়েন ব্যবহার করা যায় না। কার্ড ব্যবহার করতে হয়, তার দামও বেশ চড়া, ৮ ডলার। আবার প্রতারিত হবার সম্ভাবনাকেও একদমই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

আমি বাড়িতে কল করতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু জানতাম না কার্ড কোথায় পাওয়া যায়, খুঁজে দেখব সেসময়ও হাতে ছিল না। এক বিমানবন্দর কর্মীর সাহায্য চাইলাম, সে ১৮ ইউরো চেয়ে বসল। শেষে আরেকজন তার মোবাইল ব্যবহার করতে দিল এবং এক মিনিটে নিল ২ ইউরো।

এশিয়ান বলেই হবে হয়ত বা প্রথমবার বলেও হতে পারে, চেক-ইনের সময় এক কর্মকতা বেশ সময় নিলেন, তার ব্যবহারেও বেশ তাচ্ছিল্ল্য লক্ষ্য করলাম। প্রতিটি এশিয়ানের সাথেই তার এই ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মত। আর্শ্চযের বিষয় হচ্ছে তিনি নিজেই একজন এশিয়ান!
 
বের হবার সময় জানতে পারলাম, ২০১২-এ এখানে আরো আধুনিকমানের একটি টার্মিনালের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। যার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে ।

দোহা বিমানবন্দরের একজন বললেন, এটি আরো বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হবে এবং  বিমানবন্দর সর্ম্পকে গতানুগতিক  ধারণাকেই পাল্টে দেবে।

বাংলাদেশে এমন একটি বিমানবন্দরের স্বপ্ন বুনতে বুনতে বার্লিন ফ্লাইট ধরতে পা বাড়ালাম....  

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৩ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১১

e-mail: [email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।