লেখক ও বেতার সাংবাদিক মিজানুর খানের প্রথম উপন্যাস ‘সোনার পরমতলা’।
বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের মতোই একটি গ্রাম পরমতলা।
মুক্তিযুদ্ধের এই গল্প বলতে গিয়ে মিজানুর খান টেনে এনেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বর্বরতার কথা, নাৎসি বন্দিশিবিরের কাহিনী, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কাহিনীকে ওইসব নারকীয় ঘটনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার সুযোগ করে দেবে পাঠককে।
আর এ চেষ্টাটিই মুক্তিযুদ্ধের গতানুগতিক উপন্যাসগুলো থেকে ‘সোনার পরমতলা’কে আলাদা করেছে।
লেখক মিজানুর খান বাংলানিউজকে জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের প্রত্য অভিজ্ঞতার কথা তিনি সরাসরি শুনেছেন স্থানীয়দের মুখে। শুনেছেন নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথাও। ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের বিষয়ে ইতিহাসের বহু পাতাও হাতড়াতে হয়েছে তাকে। সেই সব কাহিনীর নির্যাস আর নিজ গ্রামের ঘটনা থেকে আজন্মলালিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরেছেন ‘সোনার পরমতলা’য়। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি আর পরমতলার মানুষের দীর্ঘশ্বাস উঠে এসেছে এ উপন্যাসে।
উপন্যাসের পটভূমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ গড়িয়েছে জার্মানি পর্যন্ত। প্রবাস জীবনের গল্পগাথার মধ্যেই বিধৃত হয়েছে ১৯৭১ ও তার পরবর্তী সময়ের কথা।
শৈশব থেকেই লেখালেখি করেন মিজানুর খান। তখন লিখতেন মনটি রহমান নামে। শুরু হয়েছিলো ছড়ার হাত ধরে। পরে কিশোর কবিতা ও গল্প। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশুনার সময় ‘অ্যালবাম’ নামের একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনা করতেন তিনি। পরে পুরোদস্তুর সাংবাদিক। প্রথমে সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’, পরে ‘সাপ্তাহিক ২০০০’ ও ‘ডেইলি স্টারে’ কাজ করেছেন। বর্তমানে আছেন বিবিসির বাংলা বিভাগে।
এর আগেও তার কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। শাহরিয়ার কবিরের সম্পাদনায় ডানা পাবলিশার্স থেকে বেরিয়েছে ‘একাত্তরের অবিরাম রক্তরণ’। এই বইটি নিউ ইয়র্কের আলপাইন গ্রুপ থেকে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। নাম ‘টুয়েন্টি ইয়ার্স আফটার জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ’। অনুপম প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে ‘ফতোয়াবাজ’। বিচিত্রায় এই প্রচ্ছদ প্রতিবেদনের জন্যে তিনি পেয়েছিলেন নূরজাহান স্মৃতি পুরস্কার।
‘সোনার পরমতলা’ তার প্রথম সৃজনশীল সাহিত্য। বইটি প্রকাশ করেছে ‘ঐতিহ্য’।
বাংলাদেশ সময় ২২০০, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১১