ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুরে মনোতোষ হালদার (৪৫) নামে এক গ্রাম-পুলিশ সদস্যের পা কেটে নিয়ে গেছে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার উত্তর তাঁরাবুনিয়া গ্রামে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনোতোষকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে তার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের একটি বাগান থেকে তার বিচ্ছিন্ন পা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আহত মনোতোষ-এর ভাই হরতোষ হালদার জানান, রাত দেড়টায় ১০ থেকে ১৫ জন দুর্বৃত্ত মনোতোষের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তাকে রক্ষা করতে স্ত্রী সবিতা রানী মনতোষকে জাপটে ধরেন। তার পরেও দুর্বৃত্তরা তাকে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের চৌকাঠের ওপর ডান পা রেখে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হাঁটুর নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়।
এ সময় তার দুই মেয়ে এবং স্ত্রীর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসতে চায়। কিন্তু বাড়ির প্রতি ঘরের দরজায় দুর্বৃত্তরা অস্ত্র নিয়ে পাহারা দিচ্ছিল। ফলে তারা আর সামনে আগাতে পারেননি।
মনোতোষের পা কাটার পর দুর্বৃত্তরা বিচ্ছিন্ন পা-টি সঙ্গে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর গুরুতর অবস্থায় মনোতোষকে এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রথমে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রাত পৌনে ৩টায় ভর্তি করা হয়।
এবিষয়ে মনতোষের স্ত্রী সবিতা রানী বাংলানিউজকে জানান, ‘ডাকাত কবলিত এলাকা হওয়ার কারণে মনোতোষ প্রতিরাতে পুলিশের সঙ্গে এলাকা পাহারা দিতেন। এমনকী বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অপরাধীদের তথ্য পৌঁছে দিতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপরাধীরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে অন্ধকার ও মুখোশ পরা থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি। ’
এ ব্যাপারে সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন জানান, ‘আমার জানা মতে মনোতোষের কোনো ব্যক্তিগত শত্রু ছিল না। তার বাবাও এলাকার চৌকিদার ছিলেন। থানা পুলিশকে সহযোগিতার করণেই দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়েছে। ’
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএ খালেক বাংলানিউজকে জানান, ‘এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মনোতোষ বিভিন্ন সময় পুলিশকে তথ্য দিতেন। তার ওপর কারা হামলা চালিয়েছে, তা জানতে এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। ’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১১