রাজশাহী: রাজশাহীতে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ ৭ বছর নর্বনিম্ন ৪মাসের কারাদণ্ডের বিধান রেখে ৪৪ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন বিশেষ আদালত।
রাজশাহী বিজিবি’র ৩৭ রাইফেল ব্যাটালিয়নের বিশেষ আদালতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে এই রায় ঘোষণা করা হয়ে। এতে প্রত্যেককে ১শ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত ৪৪ জনের মধ্যে ৭ বছর করে সাজা হয়েছে ৫ জনের, ৬বছর করে ২জনের, ৫বছর করে ৪জনের, ৪বছর করে ২জনের, ৩ বছর করে ৪ জনের, ২বছর করে ৭ জনের, ১জনের ১ বছর এবং ১৯ জনকে ৪মাস করে সাজা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ জানুয়ারি রাজশাহী-৩৭ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে স্থাপিত ১৭ নম্বর বিশেষ আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই দিন ধার্য করা হয়।
সেদিন মামলার অভিযুক্তরা তাদের পক্ষে ১২ জনকে সাফাই সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করলেও তারা কেউই আদালতে স্যা দিতে রাজি হননি।
এসময় আদালত অভিযুক্তদের এক মিনিট করে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেন।
পরে আদালতের সভাপতি কুষ্টিয়ার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল নজরুল ইসলাম সরকার ৩ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করে আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন।
আজ ৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রায় ঘোষণাকালে বিশেষ আদালতের সভাপতিকে সহায়তা করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাজী মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন ও মেজর আশফাক হোসেন।
এছাড়া আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধিত্ব করেন অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ সেলিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশেষ প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি রাজশাহী বিডিআরের ৩৭ ব্যাটালিয়নের বিশেষ আদালতে দ্বিতীয় দফা বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কার্য শুরু হয়। প্রথমেই আদালতে অভিযুক্তদের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখানো হয়। পরে ৪৪ জন জওয়ানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। এ সময় ১৫ বিডিআর সদস্য তাদের দোষ স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন।
ওই দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। পরদিন বাকি ৪৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও তাদের পক্ষে ১২ জনকে সাফাই সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হয়। কিন্তু তারা কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি রাজশাহী-৩৭ রাইফেল ব্যাটালিয়ন ও সেক্টর সদর দপ্তরের বিডিআর সদস্যরা অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিদ্রোহ ও অস্ত্র উঁচিয়ে গোলাগুলি করে। এতে এক রিক্সাচালক গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমজান আলী বাদী হয়ে ১৭ মে রাজশাহীর সিএমএম আদালতে ৯৩ বিডিআর সদস্যকে আসামি করে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। এরপর ১৮ মে ৩৭ রাইফেল ব্যাটেলিয়ন থেকে ৬৫ এবং সেক্টর সদর দপ্তর থেকে ২৮ বিডিআর জওয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়।
রাজশাহী-৩৭ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে জানান, ৯৩ আসামির মধ্যে বিডিআর আইনে বিশেষ আদালতে ৪৪ জনের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বাকিদের বিচারকাজ দেশের প্রচলিত আইনে সম্পন্ন করা হবে।
তারা এখন কারাগারে বন্দী আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১১