ঢাকা: কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যার ঘটনায় দায়ের করা রিট আদালতে উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন।
গত ১৭ জানুয়ারি ন্যাশনাল ফোরাম ফর প্রোটেকশন অব হিউম্যান রাইটস মহাসচিব অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম এ রিট করেন।
বাংলাদেশ সরকারকে কেন সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, কমিশন গঠন করে হত্যাকাণ্ড বন্ধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ব্যর্থতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না ও নিহত ফেলানীর পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এই মর্মে তিনটি নির্দেশনা চেয়েই রিট করেন তাজুল ইসলাম।
শুনানিকালে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার সঠিক পথেই এগুচ্ছে। এরই মধ্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছে। এটি সরকারের ‘পলিসি ম্যাটার’। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার অধিকার নেই। ’
এ সময় তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সীমান্তেও সেটা করতে হবে। ’
আদালত বলেন, ‘ফেলানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এরই মধ্যে বিএসএফ ক্ষমা চেয়েছে। তারা দু’জন জওয়ানকেও প্রত্যাহারও করেছে। ’
‘তাহলে এটি কি আমাদের বিষয় না?’- তাজুল ইসলামের এ প্রশ্নের জবাবে আদালত বলেন, ‘এটি দু’দেশের সম্পর্কের বিষয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আলতাফ হোসেন এ ব্যাপারে কিছু নথিপত্র পাঠিয়েছেন। তাতে দেখেছি,সরকার সঠিক পথেই এগুচ্ছে। ’
এ সময় তাজুল ইসলাম মানবাধিকার সংস্থা ও পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘অধিকার ও গার্ডিয়ান পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী গত দশ বছরে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন। কেবল গত বছরই বিএসএফের হাতে প্রাণ দিয়েছেন ৩৩৭ বাংলাদেশি। ’
তিনি আরো বলেন, ‘ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দশ দিন পর ভারত দঃখ প্রকাশ করেছে। এ খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিলে তা-ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পেতো। ’
প্রসঙ্গত, শুনানি শুরুর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক’জন কর্মকর্তা এসে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেন। তবে এ ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেল কিছু বলেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১১