মাদারীপুর: মাদারীপুরে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সরকার-নিষিদ্ধ নোটবই। সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রেণীর অসাধু পুস্তক ব্যবসায়ী বছরের শুরু থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে এ অবৈধ ব্যবসা।
সরজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, ২০১১ শিক্ষাবর্ষের পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর সব বিষয়ের নোটবই জেলার বিভিন্ন বইয়ের দোকানে বিক্রি হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিকও যুক্ত এ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে। তারা নির্দিষ্ট কিছু প্রকাশনীর বই কেনার জন্য বুকলিস্ট ধরিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের হাতে। বুকলিস্টে যেসব প্রকাশনীর বই অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে সে সব প্রকাশনী থেকে শিকরা পাচ্ছেন কমিশন।
শিকদের এ কমিশন বাণ্যিজের কারণে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষাবিদদের।
অবৈধ নোটবই বিক্রি প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদারীপুর শহরের পুরান বাজারের এক পুস্তক ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, ‘পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করা হয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) লেখালেখি করলেও কোনো কাজ হবে না। ’
এ প্রসঙ্গে সরজমিন গিয়ে কথা হয় মাদারীপুরের বাঘৈর এলাকার অভিভাবক হামিদ মিয়ার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘স্যারেরা লেকচার কোম্পানির বই নিতে বলছে। তাই ছেলের জন্য ৫ম শ্রেণীর একটি লেকচার গাইড কিনেছি। ’
অবৈধ নোটবই বিক্রিতে শিকদের সহযোগিতা ও বাজারে নোটবই বিক্রি প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘এ কাজে শিকরা ছাত্রদের উদ্বুদ্ধ করছে কিনা আমার জানা নেই। কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তদন্তসাপে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
অবৈধ নোটবই বিক্রি ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রশাসনের লোকজনের অবৈধ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে মাদারীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউয়ুম আলী সরদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘মাদারীপুরে অবৈধ বই বিক্রি হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। ’
তিনি উল্টো জানতে চান, ‘আপনার জানা থাকলে বলুন, কোথায় কোথায় বিক্রি হচ্ছে। ’
তার প্রশ্নের জবাবে এ প্রতিবেদক মাদারীপুর শহরের একটি প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরির নাম ও ওই লাইব্রেরিতে রোববার অবৈধ নোটবই বিক্রির সময় উল্লেখ করলে ওসি আর কোনো কথা না বলে মোবাইল ফোন রেখে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১১