ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইতালির নাগরিকত্ব প্রায় চূড়ান্ত, যেতে পারলেন না ফরহাদ দম্পতি

রিয়াজ রায়হান ও মহিবুব জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১১
ইতালির নাগরিকত্ব প্রায় চূড়ান্ত, যেতে পারলেন না ফরহাদ দম্পতি

ঢাকা : নয়াপল্টনের বাসায় খুন হওয়া ফরহাদ খান দম্পত্তির আগামি দু’ তিন মাসের মধ্যেই স্থায়ীভাবে ইতালি চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইতালির আধুনিক জীবন যাপনের পরিবর্তে তাদেরকে চলে যেতে হলো পৃথিবী ছেড়ে।



ইতালিতে তাদের দু’জনেরই নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল। এ জন্য পুরো প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন তারা। ফরহাদ খানের পারিবারিক সূত্রেই এ তথ্য জানা গেছে।

ফরহাদ খানের ছোট ভাই আ. ছামাদ খান বাংলানিউজকে জানান, ফরহাদ খানের মেয়ে আইরিন খান তার স্বামীর সঙ্গে ৬ বছর আগে ইতালি চলে যান এবং স্থায়ী নাগরিকত্ব লাভ করেন। এরপর থেকে আইরিন খান তার বাবা-মাকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে যাবতীয় উদ্যোগ নেন।

ছামাদ জানান, প্রতি তিন চার মাস অন্তর ফরহাদ খান ও তার স্ত্রী রহিমা খাতুন ইতালিতে মেয়ের কাছে যেতেন এবং দেড়-দুই মাস অবস্থান করে দেশে ফিরতেন। মাত্র দুই মাস আগে রহিমা খাতুন ইতালি থেকে দেশে ফিরেই স্বামীসহ স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
 
ডিএমপি কমিশনারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন
রাত সোয়া ৮ টায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদ নয়াপল্টনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডস্থলে পৌঁছেন। তিনি ঘুরেফিরে দেখেন ও উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দোতলার অপর ফ্যাটে বসবাসকারী বাড়ির মালিক মফিলা বেগম রাত ৮ টা পর্যন্ত ফরহাদ খানের ফ্যাটে অবস্থান করে তার স্ত্রী রহিমা খাতুনের সঙ্গে গল্প-গুজব করেন। আরও পরে অফিস থেকে বাসায় ফেরেন ফরহাদ খান।

পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ আরও জানান, কোনো দুবর্ৃৃত্তচক্র বাসায় ডাকাতি সংঘটিতকালে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে না-কি ব্যক্তিগত বা পারিবারিক অন্য কোনো বিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে-তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফরহাদ খান ও তার স্ত্রী সাধারণত ভেতরের বেড রুমে ঘুমাতেন। কিন্তু তাদের লাশ পাওয়া গেছে বাইর সাইডের ড্রয়িং রুমে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, নিকটজনদের এমন কেউ বৃহস্পতিবার রাতে ফরহাদ খানের বাসায় বেড়াতে আসেন যে-তাকে বা তাদেরকে নিজের বেডরুমে শোয়ানো হয়েছিল। এ বিষয়টি পুলিশ খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলেও মন্তব্য করেন পুলিশ কমিশনার।

বাড়ির নাম গুলশান
নয়াপল্টন মসজিদ গলির ভিতরে কিছুদূর এগোলেই ৭৭ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিন তলা বাড়িটির মূল মালিক ছিলেন লুৎফর রহমান। তিনি মারা যাওয়ার পর এ বাড়ির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন তার স্ত্রী মফিলা বেগম। তিনি ওই বাড়ির দোতলার একটি ফ্যাটে থাকতেন। অনেক পুরনো বাড়িটির ইট-পাথরে শ্যাওলা জমেছে, খসে পড়েছে আস্তর। এ ভবনের দোতলাতেই দীর্ঘদিন ধরে ভাড়ায় থাকতেন ফরহাদ খান।

বাড়ির বর্তমান মালিক মফিলা বেগম জানান, ফরহাদ খানের পরিবারটির সঙ্গে খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল তার। ফরহাদ খানের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানার গান্দিরা গ্রামেও আসা যাওয়া ছিল বাড়ির মালিকের। মফিলা বেগম বলেন, ‘এমন সজ্জন মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। তাদের দুর্ভাগ্যজনক খুনের বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। ’

বাংলাদেশ সময় : ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।