ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

‘ভিক্ষা অপরাধ হলে রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদা চাওয়া কেন নয়?’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১১
‘ভিক্ষা অপরাধ হলে রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদা চাওয়া কেন নয়?’

ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার সমাজ ও সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, জীবিকার তাগিদে ভিক্ষা অপরাধ হিসেবে গণ্য হলে রাজনৈতিক নেতাদের অভ্যর্থনার জন্য চাঁদা চাওয়া ভিক্ষা হিসেবে কেন গণ্য হবে না? এরকম বৈষম্যমূলক আইন গ্রহণযোগ্য নয়।

এছাড়া কোনো সভ্য দেশে ভবঘুরে আইন থাকতে পারে না বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত যে আইন হচ্ছে তাতে ব্যক্তির মৌলিক মানবাধিকার লংঘিত হবে।

 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভবঘুরে ভিক্ষা ও বিচার’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এতে সভাপতিত্ব করেন।

ভবঘুরে পুনর্বাসন আইন ২০১০ কে কালো আইন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের অভ্যর্থনার জন্য চাঁদা চাওয়া ভিক্ষা হিসেবে গণ্য হবে না। অথচ জীবন ও জীবিকার তাগিদে ভিক্ষা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে, এমন আইন গ্রহণযোগ্য নয়। এটা তামাসা এবং ছলনা। ’

কারাদণ্ডের ভয় দেখিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করার চেষ্টা ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, ‘দারিদ্র্য ও ভিুকের কথা স্বীকার করে নিতে হবে। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বরং তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তা করতে না পারাটা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। ’

অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী অবন্তী নুরুল এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা ইয়াসমিন দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

প্রবন্ধ দুটি ওপর নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবির, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার এবং অ্যাডভোকেট সারা হোসাইন সহ বেশ কয়েকজন আলোচনায় অংশ নেন।

খুশি কবির বলেন, রাষ্ট্র সবাইকে কাজ দিতে অক্ষম। সেখানে যারা ভিক্ষাবৃত্তি করছে তাদের আটক রাখা ও নির্যাতন করার আইন মধ্যযুগীয় আচরণ।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ভবঘুরে পুনর্বাসন আইন যেটি করা হচ্ছে তাতে মৌলিক অধিকারের লংঘন হবে।

সারা হোসাইন বলেন, আইনের যে খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে, তার সংজ্ঞাতেই সমস্যা রয়েছে। এ আইনে মানুষ যা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে তাকে অপরাধ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় কয়েকজন বক্তা বলেছেন, ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের আগে সক্ষমদের কর্মসংস্থান দিতে হবে। আর অক্ষমদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায়  নিয়ে আসতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১১।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।