ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী’

রিয়াজ রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১১
‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী’

টঙ্গী থেকে ফিরে: ‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। ’ বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত এ প্রবাদটি তার সার্থকতা আবারও উন্নত শীরে! জানান দিল বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে।



হাজার হাজার র‌্যাব-পুলিশের কড়া নজরদারী, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নিবিড় পর্যবেক্ষণ কোনো কিছুই অজ্ঞান পার্টি আর চোর ব্যাটাদের কর্মসাধনে এতটুকু ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি।

অজ্ঞান পার্টি আর চোরদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন ইজতেমায় আসা অন্তত শ’খানেক মুসল্লি। এদের দৌরাত্বে বিব্রত আয়োজক ও আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শনিবার ইজতেমার প্রথম দিনে প্রায় ২০ জন চোর আর পকেটমারকে পুলিশ আটক করছে।  

একটু লাভের আশায় সুদূর বরিশাল থেকে হিন্দু সম্পদায়ের পাঁচ চাটাই ব্যবসায়ী এসেছিলেন ইজতেমায়। তারা হলেন, বরিশাল নাজিরপুরের পাকুরিয়া এলাকার রঞ্জন বড়াইল (৪০), অনিঘরামি (৪৫), দিপু হালদার (২৮), সুধাংশু চন্দ্র (৪০) ও বিষয় হালদার (৪২)।

বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে একসঙ্গে রাতের খাবার শেষে সারা দিনের ক্লান্তি মুছতে বিছানায় গা এলিয়ে একটু শুয়ে ছিলেন ওই পাঁচ ব্যবসায়ী। কিন্তু তাতেই কেল্লা ফতে! সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাদেরকে প্রথমে টঙ্গী হাসপাতাল ও পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ১২ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও তাদের জ্ঞান ফেরেনি।

ঢামেক হাসপাতালে তাদের দেখাশুনা করতে আসা অপর এক ব্যবসায়ী রতন কুমার বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাত আটটার দিকে খাবার খাওয়ার সময় কয়েকজন লোকও তাদের সঙ্গে খেতে বসেন। এসময় সবাই একে অপরের খাওয়া ভাগ করে খান। কিন্তু খাওয়ার শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পাঁচ ব্যবসায়ী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ’

তিনি জানান. ব্যবসায়ীদের হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের তাবুতে থাকা সব মালপত্র চুরি হয়ে যায়। এটি অজ্ঞান পার্টির কাজ বলে তিনি মনে করছেন।

এছাড়া জুমার নামাজের পর কয়েকজনকে ইজতেমা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোর ও পকেটমাররা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদের হাতে মোবাইল, মানিব্যাগ খুঁইয়েছেন বরিশালের রহমান, রংপুরের মানিক, উত্তরার সাজিদসহ অনেকে।  

এসব অপরাধে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রায় ২০ জনকে পুলিশ আটক করে টঙ্গী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। টঙ্গী থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক মালেকা পারভীন বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, টঙ্গী ও আশপাশের এলাকার প্রায় ১০টি চক্র ইজতেমায় মানুষের ভিড়কে কাজে লাগিয়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে।

র‌্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক নিশাদুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবুও যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদেরকেও সহযেগিতা করা উচিত। যেকোনো সমস্য সমাধানের জন্য আমরা সবাই সব সময় প্রস্তুত আছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।