ঢাকা: জরিপ রিপোর্ট নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র (টিআইবি) চেয়ারম্যান এম হাফিজউদ্দিন খান ও নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত মূল্যায়ন কমিটির বৈঠক(চা-চক্র) অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার।
সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ড. ইফতেখারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে আমরা জরিপ রিপোর্টের যৌক্তিকতা বুঝাতে পেরেছি বলে মনে করি। যারা বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত শুধু তাদেরকেই প্রশ্ন করা হয়েছে।
আদালত অবমাননার অভিযোগ এলে তা মোকাবেলার মতো তথ্য প্রমাণ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘অনুমাননির্ভর প্রশ্নের উত্তর হয় না। ’
গতকাল বুধবার টিআইবির এ তিন কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে এই চা চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত টিআইবি’র এক খানা জরিপে সেবা খাতগুলোর মধ্যে দুর্নীতিতে বিচার বিভাগ শীর্ষে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ঘুষ লেনদেন বেশি হয় উচ্চ আদালতে। এ জরিপের তথ্যাদি চেয়ে ২৮ ডিসেম্বর টিআইবিকে প্রথম চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পরদিন টিআইবি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
এ রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। ওই কমিটির পর্যালোচনায় টিআইবির প্রথম দফায় পাঠানো প্রতিবেদনকে অস্পষ্ট ও অসম্পূর্ণ বলা হয়।
পরে আরও দুই দফায় টিআইবিকে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রতিবারই সুপ্রিম কোর্টের চাহিদা অনুযায়ী তথ্যাদি পাঠিয়েছে টিআইবি। টিআইবির জরিপ রিপোর্টটি এরইমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নাকচ করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম টিআইবি’র জরিপের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এছাড়া, টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম হাফিজ উদ্দিন খান, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও সিনিয়র ফেলো মো. ওয়াহিদ আলমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে কুমিল্লার আদালত টিআইবি’র তিন শীর্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের মামলাটি খারিজ করে দেয়। চট্টগ্রামের আদালত তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে।
টিআইবি’র তিন শীর্ষ ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালতে আগামী ১৩ জানুয়ারি এবং জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম কেশব চন্দ্র রায়ের আদালতে ৩০ জানুয়ারি হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও টিআইবির রিপোর্টের প্রতিবাদ জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১