ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শরীয়তপুর ও মানিকগঞ্জে ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে

ন্যাশনাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১০

পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এছাড়া মানিকগঞ্জে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি বাড়ায় তীরবর্তী ১৫ টি ইউনিয়নের ৫০ টিরও বেশি গ্রাম ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।



শরীয়তপুর: পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় জেলার নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
নড়িয়ার কেদারপুর, ওয়াপদা, চন্ডীপুর, সুরেশ্বর, পাঁচগাঁও, সাহেবের চর, চরজুজিরা ও মুন্সিকান্দি এবং জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডুবা, পাইনপাড়া, পালেরচর ও মঙ্গলমাঝির ঘাট সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। এসব এলাকায় ভাঙ্গনের শিকার প্রায় ৪০টি পরিবার নিরাপদ দূরত্বে সরে গেছে।
 
বন্যার পানির তোড়ে শরীয়তপুর-জাজিরা সড়কের মঙ্গলমাঝির ঘাট এবং শরীয়তপুর-নড়িয়া সড়কের চন্ডীপুর অংশের এক কিলোমিটার পাকা সড়ক ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া মঙ্গলমাঝির ঘাট সংলগ্ন বাজার, চন্ডীপুর বাজার, ওয়াপদা বাজার ও সুরেশ্বর বাজারের কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।

ইতোমধ্যেই মঙ্গলমাঝির ঘাট ও চন্ডীপুর বাজারের ২০টি দোকান অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

চন্ডীপুর এলাকার সালাম মিয়া বলেন, ‘ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় বাড়িঘর ভেঙ্গে অন্য জায়গায় সরাইয়া নিছি। কিন্তু বসতভিটা ও চাষের জমিতো কোথাও নিতে পারুমনা। ভাঙ্গন আমাগো সর্বশান্ত কইরা দিছে। ’

সাহেবের চর গ্রামের বৃদ্ধ আবু সিদ্দিক গাজী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ভাঙ্গন ঠেকাতে কেউ কিছু করেনা। ’

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ভাঙ্গন রোধে এ মূহুর্তে আমাদের কিছু করার নেই। তবে নড়িয়া এলাকায় ভাঙ্গন রোধে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁধ দেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। ’
মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৫০টিরও বেশি গ্রামে ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, গত এক সপ্তাহে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৪০ টি গ্রামের প্রায় ১৫০ টি ঘরবাড়ি, শিা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার ও আবাদি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে শিবালয় উপজেলার যমুনা তীরবর্তী তেওতা, জাফরগঞ্জ হাট ও কয়েকটি শিা প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।
হরিরামপুর উপজেলার চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, চলতি মৌসুমে পদ্মার ভাঙ্গনে বহু মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত মানুষজন গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে। সেখানে তারা অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতন জীবন যাপন করছে।
মানিকগঞ্জ পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, হঠাৎ একসঙ্গে ১৫/১৬টি ইউনিয়নের বিশাল এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে পাউবো।   বাঁধের ধস ঠেকাতে তাৎনিকভাবে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এছাড়া হরিরামপুর, শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলায় ভাঙ্গন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপোয় রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এ মূহুর্তে বিকল্প হিসেবে উজানে ক্রস ড্যাম কিংবা টি-বাঁধ নির্মাণ করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন ছাড়া ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ’   

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।