ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঈশ্বরদীতে ভোটকেন্দ্রে হামলায় পৃথক ৩টি মামলা : অজ্ঞাত আসামি ৩ শতাধিক

শাহীন রহমান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১

পাবনা : পৌরসভা নির্বাচনে পাবনার ঈশ্বরদীতে একযোগে ১৩টি ভোটকেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশের ওপর হামলা এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়।



পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ৩টি মামলা দায়ের করে।

এদিকে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই.) ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০ জনকে আসামি করে (মামলা নং ৯), আটঘরিয়া থানার এস.আই. দুলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে (মামলা নং ১০) এবং একই থানার এস.আই. আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০/৯০ জনকে আসামি করে (মামলা নং ১১) পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেন।

এ প্রসঙ্গে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামিউল আলম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ’

মামলায় অভিযুক্ত ৫ আসামির নাম জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে তিনি তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

মামলার বিষয়ে ৯নং মামলার বাদী ঈশ্বরদী থানার এস.আই. ইব্রাহিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈশ্বরদী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে ব্যালট বাক্স নিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় ৭০ থেকে ৮০ জনের একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা এ সময় দ্রুত কেন্দ্রে ঢুকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ি। ’

১০নং মামলার বাদী আটঘরিয়া থানার এস.আই. দুলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ‘নারিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমিসহ ৬ জন পুলিশ ও ২ জন আনসার সদস্য দায়িত্বরত ছিলাম। রাত ৮টার দিকে ভোট গণনার সময় আনুমানিক দেড় শতাধিক সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর হামলা করে ভোট কে প্রবেশের চেষ্টা চালায় এবং ইট-পাটকেল নিপে শুরু করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশে পুলিশ ১৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ’

১১নং মামলার বাদী আটঘরিয়া থানার এস.আই. আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলাম। রাত ৭টা ৫০ মিনিটে এই কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় ৮০ থেকে ৯০ জনের একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে হামলা করে ইট-পাটকেল নিপে শুরু করে এবং অশ্লীল ভাষায় স্লোগান দেয়। এসময় তারা ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। ’

প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ৮টার দিকে ভোট গণনার সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর পরাজয় টের পেয়ে ঈশ্বরদী পৌরসভার ১৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। এ সময় তারা পুলিশ ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাদেরকে ল করে ইট-পাটকেল নিপে করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ৩টি কেন্দ্রে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

এ ঘটনার পর অতিরিক্ত র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাসদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় রাতেই ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে মাইকিং করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।