ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যশোরে কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, ৩ জনকে জরিমানা

তৌহিদ জামান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১
যশোরে কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, ৩ জনকে জরিমানা

যশোর: বৃহস্পতিবার যশোরের তিনটি পৌরসভায় ভোট চলাকালে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। ঘটেছে জাল ভোট দেওয়ার ঘটনাও।

এছাড়া ব্যালট পেপারসহ সরকার দলীয় কয়েকজন কর্মীকে আটক ও জরিমানা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চৌগাছা পৌরসভা
যশোরের চৌগাছা পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আনিসুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার পকেট থেকে সিল মারা একটি ব্যালট পেপার উদ্ধারের পর এ জরিমানা করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় হাজী মর্তুজা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যদর্শীরা জানান, চৌগাছার শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ তাৎণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ওই কেন্দ্রে  বিজিবি’র ক্যাম্প বসানো হয়েছে।

অপরদিকে, ভোট কেন্দ্রের পাশে ব্যানার থাকায় চৌগাছা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রোকনুজ্জমানকে ৫শ’ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বেলা ১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  

বেনাপোল
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল হাইস্কুল কেন্দ্র থেকে বন্দর থানা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি রাসেল ও কর্মী ইয়ানুরকে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ব্যালট কেড়ে নিয়ে সিল মারার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি শামীম মুসা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

এদিকে একই কেন্দ্রে প্রতিপ কর্মীকে মারপিট ও ব্যালট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইছহক মিয়া।

তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মোহাম্মদ আলী নামে তার এক পোলিং এজেন্টকে মারপিট করেছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনের কর্মীরা। বেলা ১২ টার দিকে মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা বেনাপোল হাইস্কুল কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে সিল মারছিল।

এছাড়া বিএনপি সমর্থিত পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, বাধা দেওয়ায় বিএনপি কর্মীদের মারপিটও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা রিটার্নিং অফিসার কামরুল আরিফের সেঙ্গ যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে আছি। তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ’
 
বেনাপোল পোর্ট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ‘দু’জন আটক হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ’
 
এছাড়া বড়আঁচড়া, ভবেরবেড় ও গাতিপাড়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ভোটারদের ভোট দিতে ওইসব কেন্দ্রে যেতে দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, তাদের কাছে ভোটাররা অভিযোগ করেছেন, বড়আঁচড়া কেন্দ্রে ইউনিয়ন যুবলীগের সেক্রেটারি গিয়াস ও ওয়ার্ড যুবলীগের সেক্রেটারি জসিম ভোট করে ভিতর বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট ছিনিয়ে নিজেরা সিল মেরেছেন। এছাড়া পোলিং এজেন্টদের অনেককে বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে। ভবের বেড় কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে, গাতিপাড়া কেন্দ্রের পাশের রেল লাইন ক্রস করে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের ভোট দিতে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা জোট বেঁধে সবাইকে তাড়িয়ে দিচ্ছে বলে তারা জানান।

এদিকে বেনাপোলের সাদীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনের পে ভয়ভীতি সৃষ্টি করায় তাহাজ্জত নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নওয়াপাড়া
নওয়াপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চারটি জাল ভোটের ঘটনা ঘটেছে। রুহুল আমিন নামে একজন ভোটার প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন, তার ভোট আগেই কেউ দিয়ে গেছে। জাল ভোটের মধ্যে দু’জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা ভোটার রয়েছে বলে জানা গেছে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।