ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জিয়া ‘মীর জাফরী’ করেছিল: আদালতকে ইনু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১১

ঢাকা: সামরিক ট্রাইব্যুনালে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি দিয়ে সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমান ‘মীর জাফরী’ করেছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

মঙ্গলবার সামরিক আদালতে কর্নেল তাহেদের বিচারের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি।



হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ বিচার প্রক্রিয়া সর্ম্পূণ অবৈধ। সেই মীর জাফরী শাসনামলে যেসব সৈনিককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল তার তদন্ত দাবি করছি। ’

বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ. মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল সোমবার এ শুনানি শুরু হয়।

শুনানিতে হাইকোর্ট গতকাল অভিমত দিয়েছিলেন, কর্নেল তাহেরের সঙ্গে গোপন বিচারের মুখোমুখি সিরাজুল আলম খান, হাসানুল হক ইনু, শরীফ নূরুল আম্বিয়া, আ স ম আব্দুর রব ও মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন চাইলে শুনানিতে বক্তব্য রাখতে পারবেন।

হাইকোর্টের এ অভিমতের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ (মঙ্গলবার) হাসানুল হক ইনু এবং মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন বক্তব্য রাখতে হাইকোর্টে উপস্থিত হন।
 
জাসদ সভাপতি আরও বলেন, ‘আমাকে ওই বিচারে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। টাকার অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যায় ও অসাংবিধানিকভাবে এ সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমাদেরকে সেখানে অসম্মান করা হয়। ’

এ সময় আদালতের কাছে তিনি তাদের সে হারানো সম্মান ফেরত চান।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে ‘মীর জাফরী’ করেছিল। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল। সেই সব মুক্তিযোদ্ধা হত্যার বিচার চাই।

তবে তিনি সবার আগে ওই বিচার যে অবৈধ ছিল সেই ঘোষণা দাবি করেন।

ইনু বলেন, যখন সামরিক শাসন চলে, তখন সামরিক ট্রাইব্যুনালের সকল আদেশ সামরিক আইন প্রশাসক চূড়ান্ত করেন। জিয়া ও সায়েম ছিলেন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। তাই তারা এ হত্যার দায় এড়াতে পারেন না।
 
অন্যদিকে মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন বলেন, জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত।

আদালত তখন বলেন, বাংলাদেশে মরণোত্তর বিচার হওয়ার জন্য কোনও আইন নেই।

এর জবাবে মেজর জিয়াউদ্দিন বলেন, সংসদ চাইলে এ ধরনের আইন করতে পারে। যাতে কেউ দেশটাকে নিজের বাপের সম্পত্তি মনে না করে।

মেজর জিয়াউদ্দিন আরও বলেন, কর্নেল তাহের চেয়েছিলেন ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী গঠন না করে উৎপাদনমুখী সেনাবাহিনী গঠন করতে। তিনি চেয়েছিলেন ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব যেন নষ্ট না হয়। তিনি জাতীয় সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন। এজন্যই তাকে হত্যা করা হয়। জিয়াউর রহমান তার ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই তাকে হত্যা করেছেন। ’৭৫ সালের পর থেকেই জিয়াউর রহমান উচ্চাভিলাষী ছিলেন।

কর্নেল তাহেরের গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার ভাই ড. এম আনোয়ার হোসেন, স্ত্রী লুৎফা তাহের ও সামরিক আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আরেক ভাই প্রয়াত ফাইট সার্জেন্ট আবু ইউসুফ খানের স্ত্রী ফাতেমা ইউসুফ গত আগস্ট মাসে রিট আবেদন করেন।
 
এ নিয়ে ২৩ আগস্ট  হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন।

রুলে তাহেরের গোপন বিচারের জন্য ১৯৭৬ সালের ১৬ নম্বর সামরিক ফরমানের  আওতায় আদালত গঠন, এর আওতায় গোপন বিচার এবং তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।

আগামী কাল ফের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।