ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: এবার ৩ পুলিশ কারাগারে

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১০

গাইবান্ধা: পুলিশ হেফাজতে হত্যার অভিযোগে এবার গাইবান্ধার সাবেক ওসিসহ তিন পুলিশকে সোমবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ২০০৬ সালের ২১ মে গাইবান্ধা সদর থানার পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় সাজিদুর রহমান সাজিদ নামে ওষুধ কোম্পানির এক রিপ্রেজেনটেটিভে মৃত্যু হয়।



অভিযুক্ত সদর থানার সাবেক ওসি নুর আলম, কনস্টেবল দুলাল চন্দ্র ও মিজানুর রহমান আদালতে জামিনের আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ মো. মনিরুজ্জামান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, এরআগে রোববার নাটোরে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে রোববার ১১ পুলিশকে কারাগারে প্রেরণ করে আদালত।

মামলার রাষ্ট্রপরে আইনজীবী পি পি আব্দুল জলিল আকন্দ জানান, ২০০৬ সালের ১৮ মে তৎকালীন ওসি নুর আলমের নেতৃত্বে পুলিশ গাইবান্ধা শহরের কাঠপট্টি থেকে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ সাজিদকে (২৬) গ্রেপ্তার করে। তিনি শহরের মুন্সিপাড়ার কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ সরকারের ছেলে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বাদী হয়ে সাজিদকে আসামি করে সদর থানায় একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করে। এই মামলায় ১৯ মে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডের তৃতীয় দিনে ২১ মে পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে গাইবান্ধা সদর থানা হাজতের অভ্যন্তরে সাজিদ মারা যান। পুলিশ সাজিদকে নির্যাতন করে হত্যার পর আত্মহত্যা হিসাবে প্রচারণা চালায়। কিন্তু ময়না তদন্তে সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়।

সাজিদের বড়ভাই আব্দুল মাজেদ ও গাইবান্ধা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ বাদী হয়ে গাইবান্ধা সদর থানার তৎকালীন ওসি নুর আলম, উপপরিদর্শক আবু ইউসুফ, ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক ফাহিমা হায়দার, উপপরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন, উপপরিদর্শক মাসুদ রানা, উপপরিদর্শক ফরহাদ হোসেনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

দু’মাস আগে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দিন মামলার শুনানি শেষে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আজিজুর রহমানকে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান তদন্ত করে সাজিদ হত্যার জন্য গাইবান্ধা সদর থানার তৎকালিন ওসি নুর আলম, উপপরিদর্শক আবু ইউসুফ, উপপরিদর্শক ফাহিমা হায়দার, কনস্টেবল দুলাল চন্দ্র সরকার, কনস্টেবল মিজানুর রহমান ও শহরের জনৈক দেলোয়ার হোসেনসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

উল্লেখ্য, মামলার আসামি নুর আলম, ফাহিমা হায়দার, দুলাল চন্দ্র ও মিজানুর রহমান গত ১ জুন হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেন। গত ৫ জুলাই গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন জানালে আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেন। উভয় পরে শুনানি শেষে আদালত সোমবার এ আদেশ দেন। এছাড়া তৎকালীণ উপপরিদর্শক ফাহিমা হায়দারকেও অন্তবর্তীকালিন জামিন দিয়েছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।