ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গবেষণার তথ্য:

বায়ুদূষণে ৪ শতাংশ জিডিপি ক্ষতি

রহমান মাসুদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১১
বায়ুদূষণে ৪ শতাংশ জিডিপি ক্ষতি

ঢাকা: বায়ুদূষণ দেশের জিডিপি অর্জনের পথে অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। যা বছরে জিডিপি অর্জনের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ক্ষতি করে।

এছাড়া রাজধানীতে বায়ুদূষণজনিত রোগে বছরে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এসব তথ্য জানা গেছে।
 
সাসপেন্ডেড পার্টিকুলার ম্যাটার্স (এসপিএম) নগরীর বাতাস দূষিত করে তুলছে বলেও ওই গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বায়ুদূষণের কারণে স্বাস্থ্যহানির ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং দূষণে ঝুঁকির পরিমাণ নির্ণয় ও অন্যান্য কারণ অনুসন্ধানে এই গবেষণা পরিচালিত হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একে আজাদ ও অধ্যাপক এস শাজাহান এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জে সুলতানা এই গবেষণা করেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় বায়ু দূষণকারী উপাদানগুলোর মধ্যে এসপিএম-এর মাত্রা দেশের সহনশীল মাত্রার চেয়ে ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি। এটা বায়ুদূষণের সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান।

তরল ও ধূলা, জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে এসএমপি গঠিত, যার মিশ্রণে বাতাস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, বায়ুদূষণে বছরে শুধু রাজধানীতেই ৭৪ হাজার লোক ক্রনিক ব্রংকাইটিসে আক্রান্ত হয়। এছাড়া এ কারণে অন্যান্য রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আরও প্রায় ৭ কোটি । এদের অনেকেই কাজের প্রতি উৎসাহ হারায়। ১৪ হাজার মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ২ লাখ ৮৬ হাজারের অধিক জনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে হয়।   প্রায় ২৮ লাখ লোক অ্যাজমায় আক্রান্ত হয় এবং ২২ লাখের শরীরে অসুস্থতার  লক্ষণ দেখা দেয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বায়ুদূষণের কারণে জাতীয় জিডিপির প্রায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ ক্ষতি হয়।

বায়ুদূষণজনিত কারণে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার পেছনে বছরে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা, অ্যাজমার চিকিৎসায় ৫০০ কোটি এবং শ্বাসজনিত রোগের চিকিৎসায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়।

গবেষণায় বলা হয়, ‘বায়ুদূষণকারী তিনটি উপাদান- সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার (এসপিএম), সালফার ডাই অক্সাইড ও বায়ুবাহিত বিভিন্ন উপাদান জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। ’

যানবাহন ও শিল্প কারখানার ধোঁয়া, নাগরিক আচরণের অভাব ও সরকারের দুর্বল ব্যবস্থাপনা বায়ুদূষণের প্রধান কারণ বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রতিবছর বায়ুদূষণজনিত রোগে ১৫ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে।

বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান চারটি শহরে বায়ুদূষণের পরিমাণ কমানো বছরে ২০ থেকে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার সাশ্রয় সম্ভব হবে।

এই শহরগুলোতে বছরে ৬৫ লাখ মানুষ বায়ুদূষণজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় বলেও বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব বাংলানিউজকে বলেন, ‘বায়ুদূষণ মানুষের জীবনীশক্তি ধ্বংস করে ফেলে, যা অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে তার পরিমাণ কেমন হতে পারে তা বলাটা একটু কঠিন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।